জনবান্ধব পুলিশবাহিনী গড়ে তুলতে পুলিশ সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের কাছে প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক সহায়তা চেয়েছেন উপদেষ্টা।
বুধবার (২৮ আগস্ট) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকে উপদেষ্টা এ সহায়তা চান।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে সন্ত্রাস দমনে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা, অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, পুলিশ সংস্কারে সহায়তা, বন্যা পুনর্বাসন ও রোহিঙ্গাদের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব পুলিশবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কারে উদ্যোগ নিয়েছি, তবে তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক সহায়তা দিয়ে যুক্তরাজ্য সহায়তা করতে পারে।
জবাবে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, সেপ্টেম্বরে এ সংক্রান্ত যুক্তরাজ্যের একটি এক্সপার্ট টিম বাংলাদেশ সফর করবে। তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পারে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে যারা আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এ সময় সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিগত দুই মাসে (৫ জুন থেকে ৫ আগস্ট) সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার প্রত্যাশা করে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত আইন ও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
উপদেষ্টা এ বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বাংলাদেশ সফরের কথা হাইকমিশনারকে জানান।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা দিতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন, সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাজ্য বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আমরা সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই। উপদেষ্টা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেন।
সারাহ কুক যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান, এ বিষয়ে স্ট্যার্ন্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিং (এসওপি) অনুসরণ করা হবে।
উপদেষ্টা এ সময় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা কামনা করেন। হাইকমিশনার জানান, রোহিঙ্গাদের সহায়তার ক্ষেত্রে অর্থায়নে যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। বিগত ৭ বছরে দেশটি রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করেছে।
তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গা ইস্যু যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে থাকে, সেজন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য কাজ করে যাচ্ছে। উপদেষ্টা এসময় বন্যার্তদের সহযোগিতায় যুক্তরাজ্যের সহায়তা কামনা করেন।