রাজধানীর বেশির ভাগ ফুটপাত দখলে, যানজটের পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ঘটনা

রাজধানীর বেশির ভাগ ফুটপাত দখল করে দোকানপাট বসানো হয়েছে। কোথাও আবার মাঝরাস্তা পর্যন্ত উঠে গেছে দোকান। এতে ব্যস্ত রাজপথ যেমন সংকুচিত হয়েছে তেমনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলতে হচ্ছে নগরবাসীকে। দুর্ঘটনা বাড়ার পাশাপাশি যানজটের তীব্রতা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ এ বিষয়ে এখনও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

রাজধানীর মিরপুর, গুলিস্তান, কারওয়ান বাজারসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পথচারীদের হাঁটাচলার জন্য ফুটপাত থাকলেও তা পুরোপুরি হকারদের দখলে চলে গেছে। কোথাও কোথাও আবার ২ থেকে ৩ স্তরে বসেছে দোকানপাট। ছোট ছোট দোকানে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি আদতে ফুটপাত। আর মূল রাস্তার ওপর ঝুড়ি ও ভ্যান বসিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ফল।

এ বিষয়ে অধিকাংশ হকার কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। অনেকেই আবার কথা বলতে বিরক্তি প্রকাশ করেন। তোফায়েল নামে এক হকার বলেন, সবকিছু ম্যানেজ করেই এখানে বসেছি। বললেই তো আর উঠানো যাবে না।

ইকবাল নামে আরেক জানান, আমরা তো রাস্তার পাশে বসেছি। অনেকে তো রাস্তার মাঝে বসেছে। তাদের জন্যই বেশি সমস্যা হচ্ছে। কিছু করে তো খেতে হবে।

এদিকে ফুটপাত দখলের কারণে অধিকাংশ জায়গায় তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে। বাসযাত্রী ও সাধারণ পথচারীরা বলছেন যাচ্ছেতাই অবস্থা, কেই দেখার নেই। রাস্তা ও ফুটপাত দখল করায় দুর্ঘটনা, যানজটের পাশাপাশি নগরীর সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সরিয়ে দেওয়া হলেও কিছুক্ষণ পর ফের একই অবস্থা। স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।

মিলন নামে এক পথচারী বলেন, হকারদের স্থায়ী বসার জায়গা বা বিকল্প ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত তারা ফুটপাত দখল করতেই থাকবে। সমস্যা সমাধানে একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা দরকার।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, রাস্তা দখল করে বা রাস্তার পাশে কেউ বসতে পারবে না। সব নীতিনির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যানজট নিরসনে একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পে হাজার কোটি টাকা খরচ করেও মেলেনি সুফল। এর মূল কারণ ক্ষমতার অপব্যবহার করে সড়কে যত্রতত্র দখলদারিত্ব। আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং গোড়া থেকে উচ্ছেদ করতে না পারলে রাজধানীর সড়ক হকারমুক্ত করা যাবে না।