দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে দেশটির একটি কারাগারে তিনি এই চেষ্টা চালান। এর আগে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে সামরিক আইন জারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়।

রাতের আঁধারে সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টা পর নানা নাটকীয়তার মধ্যে সেটি প্রত্যাহার করা হলেও পরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন পদত্যাগ করেন এবং একপর্যায়ে তাকে আটক করা হয়। তারপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। গত সপ্তাহে দেশকে সামরিক আইনের অধীনে রাখার জন্য প্রেসিডেন্টের ব্যর্থ প্রচেষ্টার দায় স্বীকার তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ের সংশোধনাগারের প্রধান শিন ইয়ং-হে আইন প্রণেতাদের বলেছেন, মঙ্গলবার রাতে আটক কেন্দ্রে আত্মহত্যার চেষ্টা করার সময় কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে।

এর আগে সামরিক আইন জারির পর নানা ঘটনাপ্রবাহের মুখে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন কিম ইয়ং-হিউন। সেসময় দায় স্বীকার করে কিম বলেন, সামরিক আইন সম্পর্কিত সমস্ত পদক্ষেপ তার কর্তৃত্বের অধীনে পরিচালিত হয়েছিল। জনসাধারণের ‘উদ্বেগ ও বিভ্রান্তির’ জন্য ক্ষমাও চেয়েছিলেন তিনি।

এর আগে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণকালে প্রেসিডেন্ট আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন। অবশ্য পরে পার্লামেন্ট সদস্যদের বিরোধিতা ও দেশটির সাধারণ জনগণের বিক্ষোভের মুখে সেটি প্রত্যাহারের কথা জানান। তবে এ নিয়ে এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

মূলত সামরিক আইনের ডিক্রি জারি এবং পরে সেটি প্রত্যাহারের পরও পদত্যাগের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইউন। এরই মধ্যে বিরোধী দলগুলো তাকে অভিশংসনের একদফা চেষ্টাও চালিয়েছে। এরপরও পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্বে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইউন। মূলত বিরোধিতা ও টানাপোড়েনের মধ্যেও তিনি এখনও ক্ষমতার মূল চাবিকাঠি ধরে রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ বা অভিশংসনের দাবিতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। প্রেসিডেন্ট ইউনকেও অভিযুক্ত বিদ্রোহের জন্য তদন্ত করা হচ্ছে। যদিও তিনি সামরিক আইন ঘোষণার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন, তবে পদত্যাগ করার জন্য ক্রমবর্ধমান আহ্বান এখনও গ্রহণ করেননি তিনি।