প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলা একাডেমিতে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় নামাজে জানাজার শেষে তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এরই মধ্যে শুরু হয়েছে সে প্রস্তুতি। চলছে কবর খোঁড়ার কার্যক্রম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের মূল ফটকে প্রবেশের পর বামপাশে বুদ্ধিজীবীদের জন্য নির্ধারিত কবরস্থানের জায়গায় হেলাল হাফিজের কবর খোঁড়ার কাজ চলছে। সেখানে বেশ কয়েকজন গোরখোদক এ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
এ বিষয়ে কথা হয় লিটন নামের এক গোরখোদকের সঙ্গে। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, কবি হেলাল হাফিজের জন্য এখানে কবর খোঁড়া হচ্ছে। সকাল ৯টার পর থেকেই আমরা কাজ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত খননের কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। আশা করি কিছুক্ষণের মধ্যেই কবর রেডি হয়ে যাবে।
এর আগে, শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত সুপার হোমের বাথরুমে পড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয় হেলাল হাফিজের। পরে কর্তৃপক্ষ তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কবি হেলাল হাফিজ গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়বেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন।
হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে।
২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পান তিনি।