ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নরওয়েপ্রবাসী ও নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে সাঈদ উদ্দিন (৩০) নামে ওই প্রবাসী যাত্রীসহ নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার রাত সোয়া ৯টায় বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক আগমনী কেনপি-২-এর সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। আহত ওই প্রবাসী যাত্রীর বাড়ি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায়।
এরই মধ্যে প্রবাসী যাত্রী ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীর মধ্যে হাতাহাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে প্রবাসী যাত্রী সাঈদ উদ্দিনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আহত প্রবাসী সাঈদ উদ্দিন কথা বলছেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়—‘আপনারা পাঁচ-ছয়জন ধরে আমাকে মারছেন।’ আর পাশে থাকা এভসেক সদস্য বলছেন—‘আমাকে ধাক্কা দিলেন। আমি কি সাধারণ মানুষ? আমার ইউনিফর্ম আছে।’
নিরাপত্তাকর্মী ও প্রবাসী যাত্রীর মধ্যে হাতাহাতি প্রসঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিমানবন্দরের কেনপি-২-এর সামনে দুজন সম্মানিত যাত্রী একজন নিরাপত্তা সদস্যকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং প্রাথমিক তদন্ত মোতাবেক জানা যায়, পাঁচজন সম্মানিত আগমনী যাত্রীর একটি দল বিমানবন্দরের কার্যক্রম শেষ করে কেনপি-২ এলাকা দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের মধ্যে একজন ট্রলিসহ কেনপি-২-এর গেটের ঠিক সম্মুখভাগে অবস্থান করেন। এতে গেটে সব আগমনী যাত্রীর জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় ওই এলাকায় সম্মানিত আগমনী যাত্রীদের চাপ বেশি থাকায় কর্তব্যরত একজন নিরাপত্তাকর্মী বিনীতভাবে ওই যাত্রীকে কিছুটা সরে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। তবে ওই যাত্রী তাতে কর্ণপাত না করে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিছুক্ষণ পরে ওই নিরাপত্তাকর্মী পুনরায় যাত্রীকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে গেলে তিনি প্রচণ্ড রাগান্বিত হয়ে পড়েন এবং অকথ্য ও অশ্রাব্য ভাষায় নিরাপত্তাকর্মীকে গালিগালাজ করতে থাকেন।’
তিনি আরও বলেন, এ সময় ওই স্থানে নিয়োজিত আরও একজন নিরাপত্তাকর্মী উল্লেখিত যাত্রীকে শান্ত করার চেষ্টা করলে একপর্যায়ে ওই যাত্রীর ছেলে (একই ফ্লাইটের যাত্রী, যিনি পেছনে অবস্থান করছিলেন) ঘটনাস্থলে এসে বিমানবাহিনীর ওই নিরাপত্তাকর্মীকে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করেন।
কামরুল ইসলাম বলেন, যাত্রীরা ওই নিরাপত্তাকর্মীকে কিলঘুষি মারা শুরু করলে, তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয় এবং ওই নিরাপত্তাকর্মী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে নিয়োজিত আনসার ও অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা এগিয়ে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের উদ্ধার করেন।