নাটক ইন্ডাস্ট্রিতে প্রাণের সঞ্চার ঘটালো ‘মন দুয়ারী’

ইউটিউবে কোটি ভিউ এখন আর তেমন ঘটনা নয়। তবে সেটি ঘটনার চেয়েও বেশি হয়ে দাঁড়ায়, যখন তুমুল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছাপিয়েও কোনও প্রেমময় নাটক এই রেকর্ড অর্জন করে। তারচেয়ে বড় বিষয়, ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নাটক ইন্ডাস্ট্রি ভুগছে ভিউ খরায়। এমন পরিস্থিতিতে মুক্তি পাওয়া ‘মন দুয়ারী’ নাটকটি সব হিসাব বদলে দিলো। অনেকেই বলছেন, নাটকটি মরা ইন্ডাস্ট্রিতে প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়েছে।

এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই বিশেষ নির্মাণটি প্রকাশের চার দিনের মাথায় অতিক্রম করেছে ১০ মিলিয়ন ভিউয়ের ঘর। তাই নয়, এখনও (২৫ ফেব্রুয়ারি) নাটকটি রয়েছে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে এক নম্বরে। লাইক শেয়ার, কমেন্টের কথা যেখানে বলাই বাহুল্য।

সিএমভি’র ব্যানারে নির্মিত ও প্রকাশিত এই নাটকের প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও নাজনীন নিহা। চিত্রনাট্য ও নির্মাণ করেছেন জাকারিয়া সৌখিন।

মাত্র ৪ দিনে কোটি ভিউ পার করা নিয়ে উচ্ছ্বসিত সংশ্লিষ্ট সকলে। নির্মাতা বললেন, ‘৪ দিনে ১০ মিলিয়ন (১ কোটি)। প্রায় ১৭ হাজার কমেন্ট। ২ লাখ লাইক। সত্যিই, বিস্ময়কর! আবেগে ভাসিয়ে নেয়ার মতো রেসপন্স। প্রিয় দর্শক, আজ আমি আপনাদের ধন্যবাদ দিবো না। কারণ সমুদ্রের অথৈ জলের মতোন আপনাদের এই ভালোবাসা। এমন ভালোবাসায় শুধু ভেসে যেতে হয়। বিনিময়ে ধন্যবাদ কিংবা প্রতিদান দেয়ার সাধ্য আমার নেই। কথা দিচ্ছি, আপনাদের এই ভালোবাসার সম্মান আমি ধরে রাখবো। নিয়মিত ভালো গল্প, ভালো নির্মাণ উপহার দিয়ে যাবো। আমার এ ছোট্ট জীবনে, কিচ্ছু চাইনি আমি আপনাদের ভালোবাসা ছাড়া। সুতরাং সাথে থাকবেন, ভালোবেসে যাবেন।’

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ১৮ ফেব্রুয়ারি সিএমভি’র ব্যানারে ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে বিশেষ নাটক ‘মন দুয়ারী’। নাটকটি প্রকাশের মাত্র চার ঘণ্টায় অতিক্রম করেছিলো মিলিয়ন ভিউ! মুক্তির পর থেকে অগণিত দর্শক ‘মন দুয়ারী’ দেখে ইউটিউবের মন্তব্যের ঘরে মাথাকুটে মরছেন এই বলে, এটি ইউটিউবে না দিয়ে সিনেমা হলে মুক্তি দিলে কী ক্ষতি হতো! বেশিরভাগ দর্শকই নাটকটিকে বড় ক্যানভাসের সিনেমা বলতে চাইছেন। যেটি দর্শকদের বাংলা সিনেমার স্বর্ণালী সময়ে নিয়ে গেছে ‘মন দুয়ারী’র পারিবারিক ক্লাইম্যাক্সে ভরা চিত্রনাট্য আর চোখ ধাঁধানো অপরূপ সিনেমাটোগ্রাফির সুবাদে।

গল্পে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অপূর্ব হঠাৎ গ্রামে ফেরেন দাদীকে ‘বেটার লাইফ’ দেয়ার জন্য নিয়ে যেতে। কিন্তু পারিবারিক বন্ধন ছেড়ে দাদী দিলারা জামান যেতে চান না। বাধা হয়ে দাঁড়ায় কাজিন নাজনীন নিহাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।

এমন ফ্যামিলি সেন্টিমেন্ট, রোমান্টিক আমেজের সঙ্গে বাংলার অপরূপ দৃশ্য আর বিশেষ দুই গান এবং আবহসংগীতের মেলবন্ধনে ‘মন দুয়ারী’ যেন অবিশ্বাস্য এক পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা হয়ে ধরা দিয়েছে ইউটিউব দর্শকদের মাঝে।

এদিকে প্রযোজক-পরিবেশক এসকে সাহেদ আলী জানান, ‘পথে হলো দেরী’ ও ‘মন দুয়ারী’র মতো বড় ক্যানভাসের ফ্যামিলি ড্রামা নির্মাণে সিএমভি আরও উদার হবে সামনে। তার ভাষায়, ‘‘বাংলা নাটককে আমরা গ্লোবাল নাটকে রূপান্তর ঘটাতে চাই। সেই চেষ্টা শুরু থেকে এখনও অব্যাহত রয়েছে বলেই ‘মন দুয়ারী’র মতো প্রোডাকশন আমরা তৈরি করছি। সামনে আরও বড় কিছু করার চেষ্টা করছি।’’