রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে মস্কো সফর করছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং। মঙ্গলবার পুতিনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সের্গেই শোইগু মিয়ানমারের এই জান্তা প্রধানকে বরণ করেছেন। শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে মিন অং হ্লেইংয়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
মঙ্গলবার মিয়ানমারের নেতা ও সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইংকে রাশিয়া বলেছে, মিয়ানমারের সঙ্গে কৃষি ও পারমাণবিক বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ভালো সম্ভাবনা দেখছে মস্কো।
রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন বলেছেন, ‘‘রাশিয়া ও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবৈধ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আমাদের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সফলভাবে বিকশিত হচ্ছে এবং পারস্পরিক বাণিজ্য বাড়ছে।’’
তিনি বলেছেন, ‘‘জ্বালানি, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক বিদ্যুৎ, পরিবহন অবকাঠামো এবং কৃষি খাতে আমাদের সহযোগিতা বাড়ানোর ভালো সুযোগ রয়েছে।’’
মিখাইল মিশুস্তিন বলেছেন, দাওয়েইতে মিয়ানমারের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে রাশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি। তবে রাশিয়ার কোন কোন কোম্পানি বিনিয়োগের এই পরিকল্পনা করছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি তিনি।
আন্দামান সাগরে মিয়ানমারের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত দাওয়ে প্রকল্পকে শিল্প, প্রযুক্তি এবং পরিবহণের প্রধান কেন্দ্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
সাধারণত বিদেশে খুব কম ভ্রমণ করেন ৬৮ বছর বয়সী মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং। মঙ্গলবার মস্কোতে তাকে স্বাগত জানান রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের অন্যতম শীর্ষ নিরাপত্তা সের্গেই শোইগু। আগামী শুক্রবার ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সংক্রান্ত নথিতে স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে মিন অং হ্লেইংয়ের।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, ‘‘আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে সম্পর্কের উন্নয়ন করছি। পূর্ব এশিয়ায় আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মিয়ানমার।’’
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী ও নোবেলজয়ী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসেন মিন অং হ্লেইং। তখন থেকেই সাড়ে ৫ কোটি মানুষের এই দেশটিতে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা চলছে।
দেশটির জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং চলতি বছরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে জেনারেলদের ক্ষমতায় রাখতে পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করছেন জান্তা প্রধান।
চীনের পাশাপাশি রাশিয়াও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সমর্থক। বেইজিংও মিয়ানমারের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করার কথা জানিয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স।