রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। কেজি প্রতি দাম চাওয়া হচ্ছে ৭০ টাকা। তবে পিস হিসেবেও নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেগুলো আগেই ওজন করে দাম নির্ধারণ করে রেখেছেন বিক্রেতারা। কেউ পিস হিসেবে নিতে চাইলে দরদামের কোনো সুযোগ দিচ্ছেন না তারা। একদাম-একরেট অনুযায়ী সর্বনিম্ন ২২০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত দাম চাওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, খিলক্ষেতসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে তরমুজ বিক্রির এ চিত্র দেখা গেছে।
আকৃতির ওপর ভিত্তি করে তরমুজগুলোকে ছোট, মাঝারি এবং বড় তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ফলের দোকানগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন অস্থায়ী জায়গায়ও বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। অনেকে আবার ভ্যানগাড়িতে ফেরি করে বিক্রি করছেন। তবে সবাই প্রথম ধাপে দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ওজনকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। ক্রেতাদের কাছে একদাম-একরেট ৭০ টাকা কেজি দাম চাওয়া হচ্ছে। অধিকাংশ বিক্রেতা রং ও মিষ্টির ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিচ্ছেন। অনেকে আবার বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য ক্রেতার সামনেই কেটে দিচ্ছেন তরমুজ।
বিক্রেতারা বলছেন, আগাম জাতের তরমুজের দাম কিছুটা বেশিই। তারপরও খুচরা বাজারে মূল্য নির্ধারিত হচ্ছে পাইকারিভাবে কে কত দামে কিনতে পেরেছেন তার ওপর ভিত্তি করে। বিশেষ করে রোজার আগ মুহূর্তে যেসব তরমুজ ঢাকায় এসেছে সেগুলোর দাম ছিল বেশ চড়া। আর রোজা শুরুর পর সেই চড়া দাম কিছুটা কমেছে। যার কারণে এখন কিছু জায়গায় তরমুজ ৭০ টাকা কেজি আবার কিছু জায়গায় ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করা হচ্ছে। মাঝারি আকৃতির (৩-৪ কেজি) একটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। আর বড় আকৃতির তরমুজ ৫০০-৬০০ টাকা বা তারচেয়েও কিছু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
এনামুল হাসান নামের এক তরমুজ বিক্রেতা বলেন, মিষ্টি এবং রঙের গ্যারান্টি। যদি মিষ্টি কম হয় কিংবা রং সাদা হয় তাহলে আমার কাছেই রেখে যাবেন। আপনার সামনে তরমুজ কেটে দেব আপনি পরীক্ষা করে নেবেন। আমরা পাইকারিভাবে যখন তরমুজ খাইনি তখনই একেবারে দেখেশুনে কেনাকাটা করি। যার কারণে নিঃসংকোচে বিক্রি করতে পারি। আজকের বাজারদর অনুযায়ী ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। সামনে যখন তরমুজের সরবরাহ বাড়বে তখন হয়ত দাম আরও কমে আসবে।
আব্বাস উদ্দিন নামের আরেক তরমুজ বিক্রেতা বলেন, অনেক ভালো বিক্রি হচ্ছে। কারণ, সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে সবার কাছেই তরমুজ অন্যতম জনপ্রিয় ফল। এটি যেমন তৃষ্ণা নিবারণ করে আবার শরীরকেও শীতল রাখে। সে অনুযায়ী এবারও রোজার প্রথম থেকেই বাজারে বেশ চাহিদা তরমুজের। প্রথমদিন থেকেই ভালে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমলে হয়ত আরও বেশি বিক্রি বাড়বে। আমরা বড় একটি তরমুজ ৬০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা দামে বিক্রি করছি। কেউ চাইলে ওজন দিয়ে বিক্রি করছি। সেক্ষেত্রে দাম ৭০ টাকা কেজি। আবার কেউ সাইজ হিসেবে নিতে পারবে।
এপ্রিল-মে মাসে তরমুজের মৌসুস হলেও রোজায় বাজার ধরার জন্যই আগাম এসব তরমুজ চাষ করা হয়েছে জানিয়ে এই বিক্রেতা আরও বলেন, মনে হচ্ছে এবার গরমের সময় তরমুজের দাম কম থাকবে। কারণ এখন এগুলো সবই আগাম জাতির তরমুজ। সামনে হয়ত নতুন করে মৌসুমি তরমুজও যুক্ত হবে। আর রোজায় বাজার ধরার জন্য প্রচুর আগাম তরমুজ চাষ হয়েছে। সবমিলিয়ে তরমুজের সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কম থাকবে।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, এখনও দাম হাতের নাগালে আসেনি। তারপরও ইফতারে তরমুজের জুসের জন্য সাধ্য অনুযায়ী তরমুজ কিনছেন তারা।
মাহমুদুল্লাহ নামে এক ক্রেতা বলেন, কারওয়ান বাজারে দাম একটু কম। আর এলাকা এবং মহল্লার স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানগুলোতে দাম কিছুটা বেশি। তারপরও ইফতারে জুস তৈরির জন্য মাঝারি ধরনের তরমুজ নিয়েছি। আগাম তরমুজ হওয়াদে খুব দেখেশুনে নিতে হয়। অনেকগুলো আবার মিষ্টি হয়না। সেজন্য একেবারে দোকান থেকেই কেটে নিয়েছি। তবে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামনে সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।