বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও ৩ কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতির মধ্যেই কড়া নিরাপত্তা নিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বেলা ৩টার পরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনের নিজ কার্যালয়ে আসেন তিনি।
এ সময় সাংবাদিকদের বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, সরকার আমাদের সাথে কথা বলেছে,আমাদেরকে বলেছে- আমরা যে কাজগুলো করছি সেগুলো যাতে আরও জোরদারভাবে করতে পারি। সেই কাজটাই আমরা করে যাবো। তবে সরকারের কার সাথে তাঁরা কথা বলেছেন তার নাম জানাননি তিনি।
তিনি আরও জানান, সরকার আমাদেরকে একটা মিশন নিয়ে পাঠিয়েছে, আমরা একচুল পরিমাণ সেই মিশন থেকে সরব না। কোন ধরনের অন্যায় দাবির কাছে আমরা মাথা নত করবো না। আমরা যে কাজটা নিষ্ঠা ও নিয়মনীতির সাথে করে যাচ্ছি তা করে যাবো।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে কর্মকর্তারা অর্থসূচককে বলেন, বিএসইসি চেয়ারম্যান এবং কমিশনারদের পদত্যাগের দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি চলমান থাকবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। বিএসইসি আমাদের অফিস। আমরা আমাদের অফিসের সম্পদ রক্ষা করবো। কেউ কোন অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আমরা তা প্রতিহত করবো।
প্রসঙ্গত, বুধবার কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁদের কয়েক দফা দাবি কমিশনের সামনে উপস্থাপন করেন। এমনকি এসব দাবিদাওয়া নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে কমিশনের পদত্যাগের এক দফা দাবির দেওয়া হয়। কিন্তু সেসব দাবিদাওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। গতকালের মধ্যে কমিশন পদত্যাগ না করলে আজ থেকে বিএসইসির সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করবেন বলে যে কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় আজ সকাল থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাল ব্যাজ ধারণ করে কর্মবিরতি পালন করছেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনারদের পদত্যাগ দাবিতে বুধবার বেলা ১১টা থেকে ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিএসইসি ভবন অবরুদ্ধ করে রাখেন তাঁরা।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজ এ কর্মসূচি পালন করছেন। মঙ্গলবার বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এক আদেশে বাধ্যতামূলক অবসরের এ সিদ্ধান্ত জানান। বিএসইসিতে নতুন কর্তৃপক্ষ যোগ দেওয়ার পর সাইফুর রহমানকে ওএসডি করা হয়েছিল। এখন তাঁকে অবসরে পাঠানো হয়।
বেলা ১১টার পর থেকে বিএসইসি ভবনে চেয়ারম্যান ও অন্য কমিশনারদের অবরুদ্ধ করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেলা দুইটা পর্যন্ত ভবনের গেট দিয়ে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভেতর থেকে কাউকে বের হতে দেননি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বেলা দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল বিএসইসি কার্যালয়ের সামনে আসে। পরে ভেতরে প্রবেশ করে দলটি। পুলিশের একটি দলও সঙ্গে ছিল। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাদের কড়া নিরাপত্তায় বিএসইসি ভবন ত্যাগ করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও অন্য কমিশনাররা। এ সময় তাঁদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে তাঁরা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।