প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে কুবি শিক্ষক আনিছ বাধ্যতামূলক ছুটিতে

এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্তরপত্রসহ প্রশ্নপত্র দেওয়ার অভিযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম আনিছুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (১২ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গঠিত তদন্ত কমিটিতে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির ছায়াদউল্লাহ খানকে আহ্বায়ক ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরীকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- প্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. মো. সাইফুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন এবং সহকারী প্রক্টর ড. নাহিদা বেগম।

রেজিস্ট্রার অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্বদ্যিালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম আনিছুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পর্যবেক্ষণপূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন প্রণয়ন এবং সুপারিশসহ রিপোর্ট দাখিলের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আনিছুল ইসলামকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিসহ ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত তিনি ক্যাম্পাসের বাইরে থাকবেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৩য় বর্ষের ২য় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়। ৩ মার্চ ও ৬ মার্চ আরও দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১৩ মার্চ আরেকটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে একটি উড়ো মেইলের (বেনামি মেইলে) মাধ্যমে চিঠি আসে। সে চিঠিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক কাজী আনিছুল ইসলামের সঙ্গে একই বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীর গোপন সম্পর্কের কথা উল্লেখ করা হয়। ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে ওই নারী শিক্ষার্থীকে শিক্ষক আনিছুল ইসলাম উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন সরবরাহ করে যাচ্ছিলেন। সেই উড়ো মেইলে প্রশ্নফাঁসের স্বপক্ষে যুক্তিও উপস্থাপন করা হয়। উড়ো মেইলের মাধ্যমে চিঠি পাওয়ার পর বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচনা করে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।