ঈদবাজারে মসলা সেমাই চিনি বিক্রির ধুম

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশেই জমে উঠেছে বেচাকেনা। পরিবারের কিছু মানুষ যেমন শেষ মুহূর্তে জামা-কাপড় কেনায় ব্যস্ত, তেমনি কেউ আছেন ঈদকেন্দ্রিক মসলা, সেমাই, চিনিসহ নানা ভোগ্যপণ্য কেনায়। ফলে একদিকে যেমন ভিড় জমেছে শপিংমল- বিপণীবিতানগুলোতে, অন্যদিকে ধুম পড়েছে অলিগলির মসলার দোকান ও সুপারশপগুলোতেও। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর চড়া দামের কারণে ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা।

বুধবার (২৬ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের আগে চাহিদা বাড়ায় বেড়েছে চিনি ও সেমাইয়ের দাম। প্রতি কেজি চিনির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর সেমাই প্যাকেট প্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। শুধু সেমাই চিনি নয়, বেড়েছে কিসমিস ও বিভিন্ন বাদামসহ আনুষঙ্গিক বেশ কিছু পণ্যের দাম। বর্তমানে খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। আর চিকন সেমাই কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। প্যাকেটজাত ২০০ গ্রাম সেমাই ব্র্যান্ডভেদে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম। প্রতিটি বাজারে এখন ছোট এলাচ প্রতি কেজি সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা, বড় এলাচ প্রতি কেজি ৩ হাজার ৩০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা, জিরা ৭ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা, গোলমরিচ ৭০০ টাকা, দারুচিনি সাড়ে ৬০০ টাকা, হলুদের গুঁড়া ৪০০ টাকা, কালোজিরা প্রতি কেজি সাড়ে ৩০০ টাকা, তেজপাতা ২শ থেকে আড়াই শ’ টাকা আদা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা।

এছাড়া আজকের বাজারে চিনা বাদাম ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। কাজু বাদাম বিক্রি হয়েছে ১২০০ টাকায়। এক সপ্তাহে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ২০০ ও ৫০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা জানান, এরই মধ্যে ডানো, পুষ্টি, ডিপ্লোমাসহ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের গুঁড়া দুধ কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে গেছে। অন্য কোম্পানিগুলোও দাম বাড়াতে পারে। খোলা চিনি ১৪০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দামও কোথাও কোথাও কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়তি রাখা হচ্ছে।

বাজার করতে আসা নাজমুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ঈদে ছোট বড় সবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে সেমাই। অতিথি আপ্যায়নে ঈদ উৎসবে সেমাই ছাড়া চলেই না। ঈদের কেনাকাটায় এখন প্রধান পণ্য সেমাই-চিনি। সেই সঙ্গে বেড়েছে বিভিন্ন মসলার বিক্রি। চাহিদা বাড়ার সুযোগে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শারমিন আক্তার নামে আরেক ক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহেই চিনি কিনেছিলাম ১৩০ টাকা কেজিতে। আজকে নিল ১৪০ টাকা। দোকানির দাবি, কয়েকদিন ধরেই নাকি দাম বাড়ছে। সেমাইয়ের দামও প্যাকেটে ১০ টাকা বেশি নিল। এভাবে সব পণ্যের দামই বাড়িয়েছে। ঈদে সেমাই চিনি না কিনলে তো হবে না, তাই বাধ্য হয়ে বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। সুযোগে মুনাফা করে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বাড়তি দামের কথা স্বীকার করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাড়তি দামে কিনে আনলে স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশিতে বিক্রি করতে হবে। তবে ঈদের পরেই এই দাম আবারও আগের মতোই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

মুদি ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, গত সপ্তাহ থেকেই চিনি সেমাই ও কয়েকটি মসল্লার দাম বেড়েছে। আগে চিনি বিক্রি করেছি ১২৫-১৩০ টাকায়। আজকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বাড়লে কিছু করার নেই। লাচ্ছা সেমাইও প্যাকেটে ৫ টাকা বেশি দামে কিনতে হয়েছে। কিশমিশ ও বাদামের দামও বেড়েছে।

মসলা ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মসলার দাম কিছুটা বেড়েছে। তাই এখানেও দাম বেড়েছে।