পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিবেশ অধিদপ্তর সারা দেশে ০২ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ১৫ মে ২০২৫ পর্যন্ত মোট ৯১৯টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। অভিযানে কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহন, অবৈধ ইটভাটা, বায়ুদূষণকারী স্টিল মিল, শব্দ দূষণ, ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য, সীসা/ব্যাটারী রিসাইক্লিং কারখানা, জলাশয় ভরাট, টায়ার পাইরোলাইসিস, চারকোল কারখানা ও খোলা জায়গায় নির্মাণ সামগ্রী রেখে বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই সময়ে ২ হাজার ১৩৬টি মামলার মাধ্যমে ২৫ কোটি ৬ লাখ ৯৩ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এই অভিযানে ৪৭১টি ইটভাটার চিমনি ভেঙে ফেলা হয় এবং কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২১৬টি ইটভাটাকে বন্ধ করতে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়। ১৩০টি ইটভাটার কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ ও অন্যান্য সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ১ জনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ৬টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৮টি ট্রাকে থাকা সীসা/ব্যাটারী গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয় এবং কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এছাড়াও, গত ০৩ নভেম্বর ২০২৪ হতে এ পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে ৩৯৬টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ৭৩৮টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৫৯ লক্ষ ৮৩ হাজার ৩ শত টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায়সহ আনুমানিক ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৫১৫ কেজি নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন জব্দ করা হয়।
অপরদিকে, আজ ১৫ মে ২০২৫ তারিখে বায়ু দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০২২ অনুসারে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা উৎপাদনের মাধ্যমে বায়ুদূষণের দায়ে ঢাকার আদাবর ও মোহাম্মদপুরসহ রাজবাড়ী ও ঝালকাঠি জেলায় ৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪টি মামলায় ২ লাখ ২২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
একই দিনে ফরিদপুর জেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় এবং ২টি মামলায় ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। কালো ধোঁয়া নির্গমনের অভিযোগে ঢাকার মিরপুর-১ এলাকায় ১টি মোবাইল কোর্ট ৪টি মামলায় ১১ হাজার টাকা জরিমানা করে।
এছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর ৬(ক) ধারা লঙ্ঘনের দায়ে গাজীপুর জেলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার অপরাধে ১টি মোবাইল কোর্ট ৯টি মামলা করে এবং ৩৫ কেজি পলিথিন জব্দ করে। একইসাথে বিভিন্ন সুপারশপ ও দোকান মালিকসহ সাধারণ জনগণকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক দূষণবিরোধী এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। পরিবেশ রক্ষায় সবার সচেতনতা ও সহযোগিতা কাম্য।