অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম শাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, পায়রা বন্দর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য কেবল একটি অবকাঠামো নয়, এটি ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার। এ বন্দর দ্রুত শেষের পথে রয়েছে। এই বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাবে একটি তৃতীয় সমুদ্রবন্দর, যা নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে রক্ষা ও পরিচালনার কৌশলে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ রবিবার (২৫ মে) সকালে পটুয়াখালীর বানৌজা শের-ই-বাংলা নৌ ঘাঁটিতে আয়োজিত কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০২৫ ব্যাচের ৪৬৩ জন নবীন নাবিকের বুটক্যাম্প প্রশিক্ষণ শেষে আয়োজিত এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ পোর্ট স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছি, যেখানে পায়রা, চট্টগ্রাম ও মোংলা- এই তিনটি সমুদ্রবন্দর এবং একটি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ অন্যান্য উপকূলীয় ছোট বন্দরগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে নৌবাহিনীর নিরাপত্তা কাঠামোর সঙ্গে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘দ্বিতীয়বার পায়রা বন্দর পরিদর্শনে এসে দেখলাম, এটি দ্রুত গতিতে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করছে। এটি চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ৪৬৩ জন নবীন নাবিকের প্রতি দৃষ্টিপাত করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তোমাদের সামনে এখন দায়িত্ব—এই দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষা করা, নীল জলরাশি পাহারা দেওয়া। কোনো ব্যক্তি নয়, দেশের প্রয়োজনে জীবন বিলিয়ে দিতে হবে। আগামী দিনে তোমরাই হবে এই ভূখণ্ডের জলসীমার অটল প্রহরী।’
তিনি নবীন নাবিকদের দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা ও ত্যাগের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই বিপ্লবের শহীদদের আত্মত্যাগ, যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের এক আবেগঘন অংশ ছিল শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী নাবিকদের পুরস্কার বিতরণ। ‘নৌপ্রধান পদক’ অর্জন করেন মো. গালিব আল মাহাদী অর্ণব, দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন মো. হাসিব হোসেন, তৃতীয় স্থান অর্জন করেন নাঈম গাজী।
নবীন নাবিকদের প্রশিক্ষণ ছিল দীর্ঘ ২২ সপ্তাহের কঠোর সামরিক প্রশিক্ষণ, যেখানে তাদের শারীরিক দক্ষতা, মনোবল, যুদ্ধ-কৌশল, নৌবাহিনীর নীতিমালা ও দেশপ্রেমে দীক্ষিত করা হয়। প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে তারা দেশপ্রেমে শপথ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।
কুচকাওয়াজে বাদ্যের তালে তাদের দৃপ্ত পদচারণায় মুখর হয় পুরো অনুষ্ঠানস্থল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সামরিক-বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী এবং অভিভাবকরা।