প্রস্তাবিত বাজেট হতাশার বাজেটে রূপান্তর হয়েছে: দেবপ্রিয়


অর্থনৈতিক রিপোর্টার: বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাজেটে অনেক প্রত্যাশা ছিল। তা বাস্তবায়ন দেখতে পাইনি। এটি প্রস্তাবিত বাজেট হতাশার বাজেটে রূপান্তর হয়েছে। এ সরকার সাধারণ সরকার নয়। কিন্তু বাজেটে যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা গতানুগতিক

বুধবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬: অবহেলিতরা কী পেয়েছে’ শীর্ষক বহুপক্ষীয় অংশীজন সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যে প্রত্যাশা থেকে ৫ আগস্ট হয়েছিল এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যে প্রয়োজন সামনে এসেছিল, বাজেটে তা প্রতিফলিত হয়নি, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর যে দাবি ছিল তা প্রতিফলিত হয়নি। উপদেষ্টা পরিষদে (ক্যাবিনেট) অনুমোদন ছাড়াই বাজেটটি এসেছে।

আরও পড়ুনঃ অর্থনীতির দুটি ফুসফুস সরকার উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

সংলাপে সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাকে সংকুচিত করা হয়েছে। এর ফলে প্রস্তাবিত বাজেট একদিক সংশ্লিষ্ট বছরের জন্য বাজেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, পাশাপাশি আগামী বছরের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতা ৬০০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা করেছে, কিন্তু মূল্যস্ফীতি ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০০ টাকা হয়েছে। এতে বাজেটে প্রকৃত অর্থেই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কমেছে। এর ফলে পরবর্তী যে সরকার আসবে এবং বাজেট প্রণয়ন করবে সে সরকারের কাছে থেকে আদায় করতে ন্যায্যতা হারাবে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটকে সুযোগ হারানোর (মিস অপরচুনিটিস) বাজেট বলা যায়। বাজেটে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বেশ বড় একটা ফারাক দেখতে পাচ্ছি। মূল সমস্যাটা হলো, পুরোনো বাজেটের কাঠামোর মধ্যেই নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বাজেটে যে লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বাস্তবসম্মত নয়।’

সেলিম রায়হান আরও বলেন, শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তাও রয়েছে। কিন্তু বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন নেই। সামাজিক সুরক্ষা খাতে কিছু পুনর্গঠন হয়েছে, কিন্তু খুব বড় ধরনের কোনো পুনর্গঠন দেখা যায়নি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের যে বরাদ্দ হয়েছে, এটাও অনেক কম। অথচ বাজেটে এবার একটা ভিন্ন কিছু করার সুযোগ ছিল।

তৃতীয় লিঙ্গের সঞ্জিবনী সুধা বলেন, বাজেটে বরাদ্দ থাকে কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। ফলে তৃতীয় লিঙ্গের জীবন মানের উন্নতি হয় না, কর্মসংস্থান হয় না। ফলে আয় নেই। তাই জীবন ধারণের জন্য পথে পথে মানুষের কাছে হাত পাততে হয়। বাজেটে এই শ্রেণির মানুষের জন্য বাজেটে আগেও থাকতো না, এবারও তাই হয়েছে।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ