নিজস্ব প্রতিবেদক:জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অবশেষে তুলা এবং অন্যান্য টেক্সটাইল ফাইবার আমদানির ওপর আরোপিত ২ শতাংশ আগাম আয়কর (এআইটি) প্রত্যাহার করেছে—যা দেশের স্পিনিং ও টেক্সটাইল মিলগুলোর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জারি করা একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই ছাড়ের আওতায় আসবে কাঁচা তুলা (কার্ডেড, আনকার্ডেড অথবা কম্বড), সিনথেটিক স্ট্যাপল ফাইবার এবং পলিয়েস্টার, অ্যাক্রিলিক ও নাইলনের মতো বিভিন্ন কৃত্রিম ফাইবার।
মিল মালিকদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এই কর তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এআইটি আরোপের ফলে ব্যবসা পরিচালনার খরচ বেড়ে যায় এবং রপ্তানিমুখী পোশাক খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ক্ষুণ্ন হয়।
শিল্পের অভ্যন্তরীণ সূত্রে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তে টেক্সটাইল মিল ও স্পিনারদের কার্যকর মূলধনের ওপর চাপ কমবে এবং তারল্য পরিস্থিতির উন্নতি হবে। “এটি সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় একটি সিদ্ধান্ত,” বলেন এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দিন আহমেদ।
তিনি অর্থ উপদেষ্টা, এনবিআর চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এই পদক্ষেপ শিল্পকে আরও প্রতিযোগিতামূলক রাখতে সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, এআইটি এবারই প্রথমবারের মতো আরোপ করা হয়েছিল।
ছাড়ের আওতায় রয়েছে ৫২০১ থেকে ৫৫০৭ পর্যন্ত এইচএস কোডসমূহ, যা কাঁচা তুলা ও স্পিনিং প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত সিনথেটিক ফাইবার অন্তর্ভুক্ত করে। এনবিআরের প্রথম সচিব (কর নীতি) স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই কর মওকুফ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
“স্থানীয় স্পিনিং মিলগুলোর কাঁচামাল আমদানিতে আগাম আয়কর প্রত্যাহার শুধুমাত্র একটি কর নীতির পরিবর্তন নয়; এটি একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং একটি শক্তিশালী, প্রতিযোগিতামূলক ও টেকসই টেক্সটাইল শিল্প গড়ে তুলতে সহায়ক হবে,” বলেন এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক স্নেহাশীষ বড়ুয়া।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) দীর্ঘদিন ধরেই ফাইবার আমদানিতে এআইটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল, কারণ তারা বলছে রপ্তানি সরবরাহ শৃঙ্খলের প্রতিষ্ঠানগুলো কর অব্যাহতির আওতায় থাকায় ইনপুট ট্যাক্স ও প্রকৃত আয়ের মধ্যে অসামঞ্জস্য দেখা দেয়।
এই সিদ্ধান্ত সরকারের পেছনের সংযোজন শিল্প (ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ) সমর্থনের বৃহত্তর লক্ষ্য এবং বৈশ্বিক টেক্সটাইল ও পোশাক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখার প্রচেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।