ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রায় দুই মাস পার হলো। ছাত্র আন্দোলনে গুলি ছুড়তে নির্দেশ দেওয়া ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সব থেকে বেশি আলোচিত ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেটের লং আইল্যান্ডে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস)।
সূত্রের বরাত দিয়ে টিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হারুন সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পুলিশ ও প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। ২০০৬ সালে ডিভি লটারি পেয়ে তার স্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান। সে সূত্রে তারা নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াত করতেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা থাকায় গণঅভ্যুত্থানের পর হারুন অর রশিদ নিউইয়র্ক স্টেটের লং আইল্যান্ডে পালিয়ে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির কয়েকজনের সহায়তায় হারুন সেখানেই গোপনে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। সেখানকার একটি ভবনের সম্মেলনকক্ষে হারুন অর রশিদ বসে রয়েছেন- এমন একটি ছবি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’র হাতে এসেছে।
এর আগে ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ উত্তরার একটি বাসায় অবস্থান করছেন- এমন খবর পেয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। যদিও সেখানে হারুনকে পাওয়া যায়নি। উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে বাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে হারুনকে পাননি। পরে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এর আগে গত ৬ আগস্টও হারুন অর রশীদের আটক হওয়ার গুঞ্জন ওঠে। কিন্তু পরদিন তিনি নিজেই আটক হওয়ার খবরটি গুজব বলে জানান। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত ৩১ জুলাই ডিএমপি থেকে দেওয়া এক আদেশে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ১৩ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান হারুন অর রশীদ। তার আগে ২০২১ সালের মে মাসে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার হিসেবে গোয়েন্দা বিভাগে পদায়ন হয় তার। এর আগে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার এবং নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।