অর্থনৈতিক উন্নয়ন টেকসই করতে অর্থনীতিতে ভালো অনুশীলন (গুড ইকোনমিক প্র্যাক্টিস) বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, এ কাজে পেশাদার হিসাববিদরা মূল ভূমিকা পালন করতে পারেন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) আয়োজনে সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টস (সাফা) ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ২০২৫ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিগত দশ মাসে সরকারে কাজ করতে এসে দেখেছি সত্যিকার অর্থে আমাদের দেশের জন্য সোনালি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। যদি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে সম্পদের সুষম বণ্টন করা যায় তাহলে আমরা যে অবস্থানে আছি তা থেকে উত্তরণ সম্ভব। আর সেটা না হলে চোরতন্ত্র (ক্লেপ্টোক্রেসি) তৈরি হবে। আমরা চোরতন্ত্রের বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিগত সময়ে আমরা দেখেছি কীভাবে অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান (ইকোনমিক রেকর্ড) ম্যানুপুলেট করে হাজার হাজার কোটি ডলার পাচার করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবসাকে সামনে রেখে অর্থপাচার (মানিলন্ডারিং) করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ব্যাপক অনিয়মের ফলে প্রচুর ক্রিমিনাল ক্যাপিটাল তৈরি হয়েছে, যা ব্যবসার ন্যায্য প্রতিযোগিতাকে (ফেয়ার কম্পিটিশন অব মার্কেট) ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। বর্তমান সরকার ব্যবসায় অন্যায্য প্রতিযোগিতা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে যোগ করেন তিনি।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য- ‘রিফর্ম, রিস্কিল, রিইমাজিন: দ্য ফিউচার অব বাংলাদেশ ইকোনোমি’। সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রায় ৬ শতাধিক পেশাদার হিসাববিদ, অর্থনীতিবিদ, পলিসি-মেকার, করপোরেট-লিডার ও ব্যবসায়ী নেতারা এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, সাফার প্রেসিডেন্ট আসফাক ইউসুফ তোলা, ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ভুঁইয়া, দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) প্রেসিডেন্ট এন কে এ মুবিন এবং ইনস্টিটিউট অব কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।
মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সিপিডি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্য ও ডিস্টিংগুইশড ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
সম্মেলনের তিনটি টেকনিক্যাল সেশনে আলোচক হিসেবে অংশ নেন সার্কভুক্ত দেশের অর্থনীতি, ব্যাংকিং, শিল্প, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা। এতে জিডিপি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অটোমেশন এবং পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় হিসাব পেশাজীবীদের পরিবর্তিত ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।