রাতের আঁধারে তিন পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে ইরানের দিক থেকেও হুংকার এসেছে বলে জানিয়েছে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
রোববার (২২ জুন) তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এক ঘোষণায় বলেছে, এখন থেকে এই অঞ্চলে অবস্থানরত প্রতিটি মার্কিন নাগরিক এবং সেনাসদস্য (হামলার) বৈধ টার্গেট।
আরও পড়ুনঃ ইরান শান্তি স্থাপন না করলে আরও হামলা চালানো হবে: ট্রাম্প
ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফোর্দো, নাতাঞ্জ আর ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র এসব হামলার অঞ্চলজুড়ে প্রতিটি মার্কিন নাগরিক ও সেনা ইরানের হামলার বৈধ লক্ষ্য। এই অবস্থার মধ্যেই নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল।
ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে একযোগে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় (ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান) সামরিক হামলা চালিয়েছে।
নিজ মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, আমাদের এই সফল অভিযান সম্পন্ন হয়েছে। ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে আমরা সফল হামলা চালিয়েছি।
অন্যদিকে, ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কথা নিশ্চিত করে ইরান জানায়, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানেও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই তিনটি পরমাণু কেন্দ্রের পারমাণবিক উপকরণ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই তিন পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির উপ-রাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিনি বলেন, আগেই আমরা তিনটি পরমাণু কেন্দ্র আগেই খালি করে ফেলেছিলাম। যদি ট্রাম্পের কথা সত্যি হয়ও আমরা বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়িনি। কারণ পারমাণবিক উপকরণ আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।
এদিকে, তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির প্রভাবশালী একজন উপদেষ্টা হোসেইন শরিয়তমাদারি।
জবাবে ইসরায়েল সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় চলে গেছে। তারা শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছে, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় সব ধরনের কাজ বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া, ইসরায়েল তাদের আকাশসীমাও বন্ধ ঘোষণা করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
ইসরায়েলি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে ইসরায়েলের আকাশসীমা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগমন ও বহির্গমন উভয়ের জন্যই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে জানায়, দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হোম ফ্রন্ট কমান্ড সব স্কুল, গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া সাধারণ মানুষকে বাইরে বের না হতেও নির্দেশনা দিয়েছে।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।