#পাচারে সহায়তার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত এক লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা ফেরত আনার দাবি জানিয়েছে স্টার্ক ব্যাংকার্স ফোরাম নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটি জানায়, বিদেশে পাচারকৃত বাংলাদেশের মেহনতি মানুষের কষ্টার্জিত আমানত ইসলামী ব্যাংকের টাকাসহ ২৮ লাখ কোটি টাকা দেশে ফেরত আনতে হবে। একই সঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের পাচারের সঙ্গে জড়িত এমডি মনিরুল মওলার পদত্যাগ দাবি করে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্টার্ক ব্যাংকার্স ফোরামের উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম, আহ্বায়ক বি এম আনোয়ার হোসেন, ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আবুল কালাম আজাদ, প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মনির হোসেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. মাসুম বিল্লাহ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বশির উদ্দিন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক ডিপোজিট, এক্সপোর্ট, ইম্পোর্ট, বিনিয়োগ, ফরেন রেমিটেন্স, মুনাফা ও সম্পদের গুণগত মানসহ সকল প্যারামিটারে নাম্বার ওয়ান ব্যাংক হিসেবে প্রসিদ্ধ লাভ করে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ব্যাংকের সাফল্য নস্যাৎ করতে একটি চক্র মাঠে নামে। এই চক্রান্তের প্রথম দৃশ্যমান পদক্ষেপ ২০১০ সালে পরিচালক পদমর্যাদার একজন সরকারি কর্মকর্তাকে ব্যাংকের পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১২ সালে সরকারি অপচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়। ইসলামী ব্যাংকের সাড়ে ৬২ শতাংশ শেয়ারের বিদেশি মালিকানায় যে সকল বক্তি ও প্রতিষ্ঠান ছিল তাদেরকে পত্রের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৪ সালে ব্যাংকবিরোধী চক্রান্ত আরো জোরদার হয়। এতে ব্যাংকটিতে বিনিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি পাঠায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অংশীজনেরা। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্গান ব্যবহার করে কৌশলে কখনো ভীতি প্রদর্শন করে বিদেশি মালিকদের নিকট থেকে শেয়ার কিনতে থাকে এস আলম গ্রুপ। ২০১৬ সালের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের শেয়ার কেনা সম্পন্ন হলে ২০১৭ সালের জানুয়ারির ৫ তারিখে স্বৈরাচার হাসিনার প্রত্যক্ষ মদদে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর মাধ্যমে ক্রিমিনাল স্টাইলে এদেশের কোটি গ্রাহকের আবেগের ব্যাংকটিকে দখল করে নেয় এস আলম গ্রুপ।
স্টার্ক ব্যাংকার্স ফোরামের আহ্বায়ত আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদেশে পাচারকৃত বাংলাদেশের মেহনতি মানুষের কষ্টার্জিত আমানত ইসলামী ব্যাংকের এক লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকাসহ ২৮ লাখ কোটি টাকা দেশে ফেরত আনতে হবে। অর্থ পাচারকারী ও দুর্নীতিবাজদের শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের সাথে জড়িত ব্যাংক লুটেরা এস আলম ও মনিরুল মওলাসহ দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রের প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে গ্রেফতারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তি নিরশ্চিত করতে হবে। ইসলামী ব্যাংকের হাজার হাজার অযোগ্য ও অবৈধ বিনিয়োগসহ সব খাতে বিধি বহির্ভূত নিয়োগ-প্রমোশন বাতিল করে সারাদেশের যোগ্য ও বঞ্চিত তরুণদের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সেই সাথে ফ্যাসিবাদের সমর্থনে গৃহীত সকল পলিসি বাতিল করে ইনসাফভিত্তিক পলিসি প্রণয়নের মাধ্যমে বঞ্চিত ও যোগ্যদের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে।