ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলবে ১৭ ফেরি ও ২০ লঞ্চ

পবিত্র ঈদুল ফিতরে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৭টি ফেরি ও ২০টি লঞ্চ চলাচল করবে।

সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দৌলোদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি, লঞ্চসহ অন্যান্য জলযানসমূহের সুষ্ঠুভাবে চলাচল নিশ্চিতকল্পে ঘাটে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে এ তথ্য জানানো হয়।

এ ছাড়া জানা গেছে, যাত্রীরা যেন ঈদে বাড়িতে ও ঈদের পরে কর্মস্থলে নির্বিঘ্নে ফিরতে পারেন সে লক্ষ্যে ঈদের আগে পাঁচ দিন ও পরে পাঁচ দিন নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ঈদের তিন দিন আগে ও তিন দিন পর পর্যন্ত সড়কপথে পণ্যবাহী পরিবহন পারাপার বন্ধ রাখা হবে। তবে জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক, কাঁচামালবাহী ট্রাক পার হতে পারবে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনও বন্ধ থাকবে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে রো রো, ইউটিলিটি ও কে টাইপসহ বহরে মোট ১৭টি ফেরি থাকবে। এ ছাড়া দৌলতদিয়া প্রান্তে ৩, ৪ ও ৭ নম্বরসহ মোট ৩টি ঘাট সচল থাকবে। ১৭টি ফেরি ও ৩টি ঘাটের মাধ্যমে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা বন্দর কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সেলিম শেখ বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চ চলাচল করবে। পাটুরিয়া প্রান্তে ৩টি ও দৌলতদিয়া প্রান্তে ৩টি ঘাট সচল রয়েছে। প্রয়োজনে আরও ঘাট সচল করার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া নির্বিঘ্নে ফেরি ও লঞ্চ চলাচলের জন্য আমরা চর কেটে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ সবার সহযোগিতায় আমরা ঘরমুখো যাত্রীদের ভালো একটি ঈদ উপহার দিতে পারব।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। থানা পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, ডিবি পুলিশসহ একাধিক টিম থাকবে। এ ছাড়া নৌপুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। যাত্রীদের নিরাপত্তা স্বার্থে জেলা পুলিশ সর্বদা মাঠে থাকবে।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মিজ সুলতানা আক্তার বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসন কাজ করবে। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ঈদের আগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে মোবাইল কোর্ট করার জন্য। যাত্রীদের থেকে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা যেন অতিরিক্ত ভাড়া না নিতে পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট থাকবে।

তিনি আরও বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা হবে। অস্থায়ী পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে, ব্রেস্টফিডিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। রাতে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া টার্মিনালে যানবাহনের ভাড়ার চার্ট দৃশ্যমান থাকবে। সচেতনতামূলক বিভিন্ন ব্যানার ঘাট এলাকায় থাকবে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমি সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মিজ সুলতানা আক্তারের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান, আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মোস্তারি জাহান ফেরদৌস, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, বিআইডব্লিউটিএ আরিচা বন্দর কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সেলিম শেখ, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি জুয়েল, দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. এনামুল হক, বিআরটিএ রাজবাড়ীর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।