একই স্থানে বিএনপির দুই পক্ষের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর একই স্থানে একই সময়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকা হয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করায় পাঁচবিবি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ কারণে আজ বিকেল ৩টায় পৌর শহরের তিন মাথায় কোনো পক্ষই প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারেনি। সেনাবাহিনী ও পুলিশ পৌর এলাকায় টহল দিচ্ছে।

পাঁচবিবি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বেলায়েত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএনপির আলাদা দুটি পক্ষ একই সময়ে একই স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছিল। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় দুপুর ২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পাঁচবিবি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

পাঁচবিবি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলী বলেন, পাঁচবিবি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পৌর শহরে টহল দিচ্ছে। বিএনপির দুটি আলাদা পক্ষের কেউই প্রতিবাদ সমাবেশ স্থল তিনমাথায় আসেননি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচবিবি উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির দুটি আলাদা পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান চৌধুরীর অনুসারী। এ ছাড়া অন্য পক্ষটির নেতৃত্বে আছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল গফুর ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন। গত ৫ আগস্টের পর আবদুল গফুরের পক্ষে যোগ দেন শামীম। গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বারোয়ারি মন্দিরের সামনে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে রাত ১১টার দিকে তিনমাথা এলাকায় হারুন-অর-রশিদ নামে শামীমের এক অনুসারীকে মারধর করেন সাইফুল-হান্নানের লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল বিকেলে একটি মিছিল বের করে গফুর-শামীম পক্ষের লোকজন। মিছিলটি দানেজপুর এলাকায় একটি চাতালে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন আহত হন। পরে পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনার পর আজ বুধবার বিকেল ৩টায় পৌর শহরের তিনমাথায় দুই পক্ষই প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করে। আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিএনপির দুটি পক্ষের কেউই এখন পর্যন্ত প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে পাঁচবিবি উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে রাইটের চাতালে বসে আলোচনা করছিলাম। এ সময় আব্দুল গফুর ও শামীম হোসেনের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। এতে আমাদের চারজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া রেলস্টেশন সড়কে উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আজ বুধবার বিকেল ৩টায় তিন মাথায় প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় প্রতিবাদ সমাবেশ করা যায়নি।

জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল গফুর বলেন, সাইফুলের লোকজন প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ নিয়ে শামীম ও সাইফুলের লোকজনের মধ্যে মারামারি হয়। আমরা থানার নতুন কমিটি গঠন ও দলীয় নেতা দীপনকে মারধরের প্রতিবাদে আমরা বিকেল ৩টায় তিনমাথায় প্রতিবাদ সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় প্রতিবাদ সমাবেশ করা যায়নি।