মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর ডলারের মান শক্তিশালি হতে থাকে। এর পরপরই কমতে শুরু করে স্বর্ণের দাম। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে যে দামে স্বর্ণের কেনা-বেচা হচ্ছে, তা গত দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
স্বর্ণের আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি আউন্স (এক আউন্স = ২৮ দশমিক ৩৫ গ্রাম) স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৫৯৭ দশমিক ৯১ ডলার বা ৩ লাখ ১০ হাজার ৮০৯ টাকায়।
স্বর্ণের বাজার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শতকরা হিসেবে স্বর্ণের দাম কমেছে দশমিক ৯ শতাংশ এবং গত ২০ সেপ্টেম্বরের পর আজ মঙ্গলবার প্রথম এই দরে বিক্রি হচ্ছে মূল্যবান এই ধাতুটি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাজার পর্যবেক্ষণ সংস্থা কেসিএম ট্রেডের শীর্ষ বাজার বিশ্লেষক টিম ওয়াটেরার রয়টার্সকে বলেন, সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং তার ফলাফল ডলারের মানের জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। স্বর্ণের দাম কমার মূল রহস্য লুকিয়ে আছে ডলারের মান শক্তিশালী হওয়ার মধ্যে।
ডলারের মান বৃদ্ধি অবশ্য এমনি এমনিই ঘটেনি; বরং এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে বা বিটকয়েনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প বাণিজ্যিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে বিটকয়েন ব্যবহারের পক্ষে থাকায় নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে বিটকয়েনের ব্যবহার। ফলে ডলারের মানও বাড়ছে।
স্বর্ণের বাজার বিশ্লেষণকারী অপর মার্কিন সংস্থা বেরেনবার্গ জানিয়েছে, বিটকয়েনের ব্যবহার বৃদ্ধির এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী ২০২৫ সালে স্বর্ণের দর কম-বেশি স্থিতিশীল থাকবে, তবে চাহিদার তেমন হেরফের হবে না। ফলে দামও খুব বেশি হ্রাস পাবে না।
রয়টার্সকে বেরেনবার্গের এক বিশ্লেষক বলেন, স্বর্ণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং অনন্য দিক হলো, এটি মূল্যস্ফীতির সময় রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। ডলারের মান শক্তিশালী হচ্ছে—এটা আন্তর্জাতিক অর্থনীতির জন্য বেশ ইতিবাচক। তবে শেষপর্যন্ত মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি থেকেই যাবে এবং সেই ঝুঁকি এড়াতে বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থের একটি অংশ স্বর্ণ ক্রয়ের জন্য আলাদা করে রাখবেন।