কাজা নামাজ পড়ার সময় কিরাত জোরে পড়া যাবে?

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা উচিত। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো এবং নামাজের জামাত দুটিই গুরুত্বপূর্ণ। তবে কোনো কারণে যদি কেউ সময় মতো নামাজ পড়তে না পারে তাহলে তার জন্য কাজা নামাজ পড়তে হবে।

কাজা নামাজ একাই পড়া যায়। একসঙ্গে অনেকের নামাজ কাজা হলে তারা চাইলে জামাতের সঙ্গে কাজা নামাজ আদায় করে নিতে পারবেন। কাজা নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের ক্ষেত্রে জোরে কিরাত পড়া যাবে কি না তা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ থাকে। যেমন একজন প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছেন—

গত কয়েকদিন আগে আমাদের সবার ফজরের নামাজ কাজা হয়ে যায়। পরে আমরা জামাতের সাথে ফজরের নামাজের কাজা আদায় করি। এবং নামাজে কেরাত জোরে পড়ি। পরে মনের মধ্যে খটকা লাগল যে, নামাজে কেরাত জোরে পড়া ঠিক হল কি না? বিষয়টির সঠিক সমাধান জানাবেন।

এই ক্ষেত্রে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো— প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সশব্দে কেরাত পড়া নিয়মসম্মতই হয়েছে। কেননা ফজর, মাগরিব ও এশার নামাযের কাজা জামাতে আদায় করলে কেরাত শব্দ করে পড়াই আবশ্যক। তা দিনের বেলায় আদায় করলেও কেরাত শব্দ করেই পড়তে হবে।
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে—

عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: عَرَّسَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً فَقَالَ: مَنْ يَحْرُسُنَا اللَّيْلَةَ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ شَابٌّ: أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ أَحْرُسُكُمْ، فَحَرَسَهُمْ حَتَّى إِذَا كَانَ مَعَ الصُّبْحِ غَلَبَتْهُ عَيْنُهُ، فَمَا اسْتَيْقَظُوا إِلَّا بِحَرِّ الشَّمْسِ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَوَضَّأَ وَتَوَضَّأَ أَصْحَابُهُ، وَأَمَرَ الْمُؤَذِّنَ فَأَذَّنَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَصَلَّى الْفَجْرَ بِأَصْحَابِهِ، وَجَهَرَ فِيهَا بِالْقِرَاءَةِ كَمَا كَانَ يُصَلِّي بِهَا فِي وَقْتِهَا.

অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও কয়েকজন সাহাবি সফরে ছিলেন। অধিক রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ায় তাঁদের ঘুম থেকে জাগতে দেরি হয়ে যায়। ততক্ষণে সূর্যোদয় হয়ে যায়। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে জামাতের সঙ্গে ফজরের নামায কাযা করেন। এবং অন্য সময়ের মতো শব্দ করে কেরাত পড়েন। (কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ১৬৮)

—(আলজামিউস সাগীর, পৃ. ৭২; ফাতহুল কাদীর ১/২৮৫;ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৬, ১২১)