যেকোনো কসমেটিক সামগ্রী মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলে ভোক্তা অধিদপ্তর সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলিম আখতার খান। কসমেটিক সামগ্রী একটি সেনসিটিভ জিনিস উল্লেখ করে ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, তাই এটা যাতে সঠিকভাবে উৎপাদন ও বিপণন করা হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এতে যদি কোনো ব্যত্যয় থাকে, এটা দেখা আমার দায়িত্ব, আমি দেখবো। যদি কোনো কসমেটিক সামগ্রী ঝুঁকিপূর্ণ হয়, আমরা সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।
বৃহস্পতিবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এএসবিএমইবি) আয়োজিত ‘কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার শিল্পখাতের রপ্তানি সম্ভাবনা : ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য আর নয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুনঃ কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআইর মহপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম, এএসবিএমইবি সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দীন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী, এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক ইসহাকুল হোসেন সুইট, অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. মাহফুজ কবির, চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এম এস সিদ্দিকী প্রমুখ।
সেমিনারে আলিম আখতার বলেন, বাংলাদেশের মতো সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা বেশি হলেও তাদের পারক্যাপিটা ইনকাম আমাদের চেয়ে বেশি। এটা মূলত সম্ভব হয় একটা আল্টিমেট লিডারশিপের মাধ্যমে, যেটা আমাদেরও প্রয়োজন। তিনি বলেন, সাধারণ ভোক্তারা আমাদের থেকে অনেক কিছু আশা করে। আমরা আমাদের জুডিশিয়ারি পাওয়ার দিয়ে যতটুকু পারি কাজ করার চেষ্টা করি। প্রধান অতিথি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা আছে যে, মিনিকেট বলে কোনো চাল নেই। কিন্তু বাজারে এ চাল দেদারসে বিক্রি হচ্ছে, যা কিন্তু আইনের লঙ্ঘন। এমন কোথাও দেখলে আপনারা (ক্রেতা) আসুন, অভিযোগ করুন। আর সংশ্লিষ্টদের বলবো, এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকুন। আমার দায়িত্বটা অনেক বড়, সে দায়িত্বটা যেন ভালোভাবে করতে পারি, তার জন্য সবারই সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, প্রায়সময় একটা কথা শুনি যে, আমরা নাকি একটা পক্ষের কাজ করি। তাই আমাকে যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য কিন্তু নিজেকেই সচেতন হতে হবে।
বক্তব্যে ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, সম্প্রতি এনবিআরের সূত্রমতে প্রকাশিত এক তথ্যে দেখা গেছে যে, আমদানিকালে একটি বিদেশি ব্র্যান্ডের ফিনিশড গুডস (প্যাকেজিংসহ) হিসেবে আইলাইনার পণ্য সব ধরনের শুল্ক ও পরিবহন ব্যয়সহ খরচ পড়েছে ৪ টাকা ৩১ পয়সা। কিন্তু এই পণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯৪০ টাকা। এতে করে সরকার ও ভোক্তারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু আমদানিকারকরা। সুতরাং দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় এখনই নজর দিতে হবে। সরকার অসাধু দাপট বন্ধ করতে না পারলে দেশীয় শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। আর তাতে করে লক্ষাধিক লোক বেকার হয়ে রাস্তায় নামবে। যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট তৈরী করবে।
এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক ইসহাকুল হোসেন সুইট বলেন, বর্তমানে কতিপয় মানহীন ও ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ির খবর প্রায়ই দেখা যায়। এসব ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন ও বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। তাই স্থানীয় উৎপাদনকে নীতি সহায়তা দিয়ে মানসম্মত পণ্য ক্রেতাদের জন্য সুলভ করা জরুরি। দেশে গ্লোবাল ব্র্যান্ডের উৎপাদন কার্যক্রম সম্প্রচারণে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি সহজলভ্য করা গেলে এবং সরাসরি কসমেটিকস পণ্যের আমদানি শুল্কহার বাড়ানো হলে দেশীয় উৎপাদন ও উদ্যোগকে এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।