গরমে বেড়েছে তরমুজ-ডাবের চাহিদা, দাম বাড়ার অভিযোগ

রোজাকে কেন্দ্র করে বাজারে আসা আগাম তরমুজ ও ডাবের চাহিদা এমনিতেই বেশি ছিল। তার উপর গত কয়েকদিনের গরমে সেই চাহিদা আরও বেড়েছে। প্রতিদিনই দুপুরের পর থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত তরমুজ-ডাবের দোকানগুলোতে ক্রেতারা ভিড় করছেন, পানি সমৃদ্ধ এই দুটি ফল সংগ্রহ করতে। এই সুযোগে বিক্রেতারাও বাড়তি দাম চাইছেন। আগের তুলনায় এখন বাজারে তরমুজ-ডাবের সরবরাহ বাড়লেও বেশি দামে বিক্রির প্রতি ঝোঁক তাদের।

শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর, বারিধারা ও বাড্ডা এলাকার বিভিন্ন ফলের দোকান ও তরমুজ-ডাবের ভাসমান দোকানগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে আগের তুলনায় তরমুজের সরবরাহ বেড়েছে। এক্ষেত্রে মাঝারি থেকে বড় আকারের তরমুজের পরিমাণই বেশি। তবে, সরবরাহ বাড়লেও বড় আকৃতির তরমুজ আগের মতো ৭০ টাকা কেজি দাম হাঁকছেন তারা। দামাদামি করলে ৬০-৬৫ টাকা কেজিতে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। আর ছোট আকৃতির তরমুজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ডাবের বাজার এরচেয়েও চড়া। দেখা গেছে, দোকানগুলোতে তিন ধরনের ডাব বিক্রি করা হচ্ছে। এরমধ্যে ছোট আকৃতির ডাব পিস ৮০-৯০ টাকা, মাঝারি আকৃতির ডাব ১০০-১৩০ টাকা এবং বড় আকৃতির ডাব ১৫০-১৭০ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। যেখানে রোজার আগেও মাঝারি আকৃতির ডাব ১০০ টাকা এবং বড় আকৃতির ডাব ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল।

ক্রেতাদের অভিযোগ, গরমের কারণে প্রয়োজনীয় ফল কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত মূল্য দিতে হচ্ছে। তাদের মতে, এই সময়ে বিক্রেতারা অনেক বেশি লাভের আশায় দাম বাড়িয়েছেন, যা ভোক্তাদের জন্য আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে।

সোলাইমান নামের এক ক্রেতা বলেন, রমজান মাসে তরমুজ ও ডাবের চাহিদা বাড়া স্বাভাবিক প্রবণতা। তারপর আবার সাম্প্রতিক সময়ে গরমের কারণে চাহিদা আরও বেড়েছে। এই সুযোগে দামও আগের তুলনায় বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনকে তৎপর হওয়া উচিত এবং বাজারে মূল্য স্থিতিশীল রাখতে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। যাতে সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য থাকে এবং কোনো অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ না নিতে পারে।

সাব্বির আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, তরমুজ ও ডাবের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি বিক্রেতাদের একাংশের অতিরিক্ত মুনাফার প্রবণতাও বেড়েছে। তারা যে দাম চাইছেন সেটি অনেক বেশি, একচেটিয়াও। যে যার মতো করে দাম নিচ্ছেন। ভাসমান দোকানগুলোর চেয়ে ফলের দোকানগুলোতে দাম কিছুটা বেশি।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজান মাসের শুরু থেকেই তরমুজ এবং ডাবের বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। ফলে পাইকারিভাবেই দাম অনেক বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে পাইকারি বাজারে।

আব্দুল হান্নান নামের এক বিক্রেতা বলেন, তরমুজের এখনো পুরোপুরি সিজন শুরু হয়নি। সেজন্য দাম একটু বেশি। আর ডাবের চাহিদা এমনিতেই গরমের সিজনে বেশি থাকে। সেজন্য দামও বেশি। তরমুজের দাম সামনে কমার সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু ডাবের দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।