সপ্তাহের বাকি ছয়দিন ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এখানে আসা হয় না। আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকালে উঠেই নাস্তা সেরে চলে এসেছি। থাকবো সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিনবো প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসও।
কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতিমা।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে মালিবাগ থেকে বাণিজ্য মেলায় এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রায়হান রহমান।
তিনি বলেন, অফিসের কাজে সারা সপ্তাহ ব্যস্ত থাকতে হয়। সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে সেভাবে সময় দেওয়া হয় না। তাই ভাবলাম আজ যেহেতু শুক্রবার, তাকে নিয়ে একটু বের হই। সে কারণেই মেলায় আসা। এখন বিভিন্ন স্টল ঘুরে পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি তার জন্য কয়েকটা শাড়ি-থ্রিপিসও কিনবো।
স্কুল শিক্ষক নাজমুল হাসান। শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে কামরাঙ্গীরচর থেকে তিনি এসেছেন ৯ বছর বয়সি মেয়েকে নিয়ে।
তিনি বলেন, সারা সপ্তাহ কাজের অন্ত থাকে না। এমনও হয় কোনো কোনো দিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরেও কাজ করতে হয়। পরিবার-পরিজনদেরকে সে অর্থে সময় দেওয়া হয় না। এদিকে মেয়েও অনেকদিন ধরে বায়না করছে, বাবা আমাকে মেলায় নিয়ে যাও। অবশেষে আজ সেই সুযোগ হলো। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ভোরেই বাপ-বেটি উঠে চলে এসেছি। এখন আমরা সারাদিন ঘুরবো, খাওয়া-দাওয়া করবো, আর দিনশেষে কেনাকেটা করে ঘরে ফিরবো।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় গৃহস্থালি সামগ্রী, শীতের পোশাক ও খাবারের স্টলে। কারণ, এসব স্টলে চলছে হরেক রকমের অফার। কর্মীরাও হাঁক-ডাকে তুলে ধরছেন নিজেদের পণ্যের কথা।
এর বাইরে নারীদের প্রসাধনী ও পোশাকের দোকানেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে। এ সময় অনেককে
সেলফিবন্দি করে মেলার স্মৃতি সংরক্ষণ করতে দেখা যায়।
বেচাকেনা কেমন হচ্ছে জানতে একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় আজ মানুষের ঢল নেমেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও। তবে সময় যত গড়াবে, আরও জমজমাট হবে বেচাবিক্রি।
প্রসঙ্গত, এবারের মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬২টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। বাকি ১১টি স্টল ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া—এই ৭ দেশের।
মাসব্যাপী এ মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।