জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি না কমলে সুদের হার আবার বাড়তে পারে

জানুয়ারিতে দেশের মূল্যস্ফীতি না কমলে সুদের হার আবার বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা। তিনি বলেছেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা এরই মধ্যে একাধিকবার নীতি সুদহার বাড়িয়েছি। আশা করছি, জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। না কমলে আবারও বাড়ানো হতে পারে।’

আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা।

মূল্যস্ফীতি ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘তবে সুদহার বাড়ানোর বিষয়ে ব্যবসায়ীরা মোটেই খুশি নন। কারণ ব্যাংকঋণের জন্য তাঁদের অতিরিক্ত সুদ গুনতে হয়। বিনিয়োগেও ধীরগতি নেমে আসে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি অন্য সংস্থাগুলোকে ঠিকঠাক মতো কাজ করা প্রয়োজন। কারণ বিনিয়োগ কমার জন্য শুধু সুদের হার এককভাবে দায়ী নয়। অবকাঠামগত উন্নয়ন, জ্বালানি সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অনেক কিছু বিনিয়োগ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একক প্রচেষ্টায় মূল্যস্ফীতি পুরোপুরিভাবে কমানো সম্ভব নয়।’

প্রসঙ্গত, বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি তলানিতে নেমেছে। গত নভেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধি গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বেনামি-জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ বিতরণ কমে আসায় এবং দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত ও পর্ষদে পরিবর্তন হয়েছে; এধরনের ১১ ব্যাংকের নতুন ঋণ প্রদান বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এই ব্যাংকগুলো অবশ্য আমানতকারীদের টাকার চাহিদা মেটাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছে।

বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কমে আসায় অনেক ব্যাংক সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এতে ঋণের চেয়ে বেশি মুনাফা মিলছে। কারণ, ঋণ দিলে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি থাকে আর বিল ও বন্ডে মুনাফা নিশ্চিত হয়। ফলে বিদায়ী ২০২৪ সালের কিছু ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় অনেক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের নভেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়েছিল, যা ২০২১ সালের মে মাসের পর সর্বনিম্ন। ওই বছরের মে মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত নভেম্বরে অর্জিত প্রবৃদ্ধি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে নিচে রয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে জুলাই-ডিসেম্বরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ৯ দশমিক ৮ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।