ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপে আবাসন খাতে স্থবিরতা, জরুরি পদক্ষেপ চায় রিহ্যাব

ঢাকা মহানগরের বৃহৎ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) ২০২২-৩৫ নিয়ে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) ও গৃহায়ন খাত সংশ্লিষ্ট শিল্প সংগঠনগুলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ খাতে গতিশীলতা আনতে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

তিনি বলেন, নতুন ড্যাপের ফ্লোর এরিয়া রেশিও সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে আবাসন খাতে মারাত্মক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ফলে বিনিয়োগ কমেছে, কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে এবং দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, ড্যাপ অনুযায়ী ভবনের উচ্চতা ও আয়তন সীমিত হওয়ায় জমির মালিকরা আর জমি ডেভেলপারদের হাতে দিতে রাজি হচ্ছেন না। এতে করে নতুন প্রকল্প শুরু করা যাচ্ছে না, ফলে আবাসন খাতসহ এর সঙ্গে জড়িত ২০০টির বেশি লিংকেজ শিল্প– যেমন রড, সিমেন্ট, ইট, কেবল, রং, টাইলস, লিফট, থাই অ্যালুমিনিয়াম, স্যানিটারি সামগ্রী ইত্যাদির বাজারে মারাত্মক মন্দাভাব চলছে।

ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এই শিল্পে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান এবং প্রায় ২ কোটি মানুষের জীবিকা জড়িত। অথচ রডের চাহিদা ৫০ শতাংশ কমে গেছে, অনেক প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে, শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আরও বড় বিপর্যয় নেমে আসবে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের চাপে ২০০৮ সালের ‘ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা’ ও ‘মাস্টারপ্ল্যান ২০১০’ বাতিল করে বর্তমান ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপ চালু করা হয়েছে, যা ভবন নির্মাণে ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে এবং নগর উন্নয়নের গতি থমকে দিয়েছে।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আমরা চাইছি সরকার একটি বাস্তবসম্মত, জনবান্ধব এবং ব্যবসাবান্ধব বাজেট উপহার দিক। ভ্যাট-ট্যাক্স সংক্রান্ত জটিলতা দূর করে এই শিল্পে বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে হবে। তবেই কর্মসংস্থান বাড়বে এবং অর্থনীতিও সচল থাকবে।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, অস্থায়ী সরকার হলেও আবাসন খাত ও সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোর সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ খাত সচল না হলে জাতীয় অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা দেশের উন্নয়ন থমকে দিতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক নিয়াজ উদ্দিন, বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মাসুম, বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক শঙ্খ কুমার রায়, বাংলাদেশ গ্লাস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হোসেন আলমগীর, বাংলাদেশ টিম্বার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ তানভীর মোহাম্মদ প্রমুখ।