দেড় হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপি হয়ে গোল্ডেন ভিসা নিয়ে দুবাইয়ে অবস্থান করা চট্টগ্রামের ইমাম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী জেবুন্নেসা আকতারকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান বিচারক এ আদেশ দেন।
বিচারক আদেশে বলেন, নাগরিকদের আমানতের টাকা ঋণের নামে মুষ্টিমেয় দুষ্কৃতকারীর বিদেশে পাচার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নাগরিকদের আমানতের অর্থ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আদেশে বিচারক বলেন, দেশের অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে নানা ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেছেন মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী। তাদের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামে ১৫টি মামলা রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণখেলাপের অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়েছে। ১০ বছর আইনি লড়াই চালিয়েও ওই টাকা উদ্ধার করতে পারেনি ব্যাংকগুলো।
বিচারক আদেশে আরও বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে তা বিদেশে পাচার করার মাধ্যমে এই ঋণখেলাপিরা রাষ্ট্রের ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছেন। দীর্ঘ এক যুগ ধরে এই শীর্ষ ঋণখেলাপিরা কোনো ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করার কারণে ব্যাংকের বিনিয়োগ খাতে আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে এবং নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইমাম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপির একাধিক মামলা রয়েছে। তার খেলাপির পরিমাণ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে গোল্ডেন ভিসায় বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের আইজি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি গত বছরের ডিসেম্বরে দেওয়া আদেশে তাদের ফিরিয়ে আনতে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তিনি এতদবিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
জানা গেছে, দুবাইয়ে অবস্থান করা মোহাম্মদ আলী ইমাম গ্রুপের চেয়ারম্যান। নব্বইয়ের দশকে খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের বাজারে বড় আমদানিকারক ছিলো ইমাম গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইমাম ট্রেডার্স। পরে গার্মেন্টস, যন্ত্রপাতি আমদানিসহ নানা খাতে ইমাম গ্রুপের ব্যবসা সম্প্রসারণ হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এসব খাতে ঋণ নিয়ে বেশির ভাগ টাকা জমি কেনায় বিনিয়োগ করেন মোহাম্মদ আলী।