পবিত্র ঈদুল আজহা মানেই ত্যাগের অনন্য শিক্ষা। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানি দেন পশু। তবে এই আনন্দঘন মুহূর্তেই অসাবধানতায় অনেকেই আহত হয়ে পড়েন বিপদে।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (নিটোর) তথ্য মতে, ঈদের আগের দিন পশু কেনার সময় লাথিতে আহত হয়ে ও ঈদের দিন এবং ঈদের পরদিন পশু কোরবানি দিতে গিয়ে আহত হয়ে মোট চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৯৪২ জন। এর মধ্যে জরুরি অপারেশন লেগেছে ২৬৪ জনের।
এছাড়াও এই তিন দিনে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩২৪ জন এবং হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৬১৮ জন।
তবে ঈদের তৃতীয় দিন আজ সোমবার। আজও সকাল থেকে সামান্য কিছু আহত রোগী আসছেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যার সঠিক হিসেব আগামীকাল দুপুরে পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়।
সোমবার (৯জুন) রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (নিটোর) ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কনসাল্টেন্ট ডা. রিপন ঘোষ।
রিপন ঘোষ বলেন, কোরবানির দিনে সারাদিনে ভাংচুর ও কাটা ছেড়া রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৩২৫ জন। এদের মধ্যে জরুরি অপারেশন লেগেছে ১০২ জনের। অপারেশনের সবাইকে ভর্তি রাখা হয়েছে। এছাড়াও অপারেশনের রোগীসহ একই দিনে গুরুতর আহত হয়ে আসা মোট ভর্তি রোগীর সংখা ১২২ জন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
এছাড়াও ঈদের দ্বিতীয় দিন গতকাল রোববার (০৮জুন) আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৩০১ জন। এদের মধ্যে জরুরি অপারেশন লেগেছে ৮৩ জনের। আর ভর্তি হতে হয়েছে ১১৭ জনকে।
একইসঙ্গে ঈদের আগের দিন পশু কিনতে গিয়ে লাথিতে ভাংচুর রোগী এসেছে ৩১৬ জন। এদের মধ্যে জরুরি অপারেশন লেগেছে ৭৯ জনের। আর মোট ভর্তি হতে হয়েছে ৮৫ জনের।
এ নিয়ে গত শুক্রবার ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরদিন মিলিয়ে মোট আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৯৪২ জন। এর মধ্যে জরুরি অপারেশন লেগেছে ২৬৪ জনের। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩২৪ জন এবং হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৬১৮ জন।
তিনি বলেন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরদিন যে সব রোগী এসেছেন এদের অধিকাংশ পশু জবাই করতে গিয়ে আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কারো হাত কেটে গেছে, কারো পা কেটে গেছে আবার কারো রগ কেটে গেছে। আর ঈদের আগেরদিন যারা এসেছেন তারা কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে পশুর লাথিতে হাত-পা ভেঙে গেছে এমন রোগী। যাদের অপারেশন লাগেনি এবং গুরুতর আহত না তাদেরকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।
এদিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দ্বায়িত্বরত সূত্র জানায়, আজও সকাল থেকে কাটাছেঁড়া রোগী এসেছে। তবে তা বিগত দুই দিনের তুলনায় কম।