রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, পুতিনের সাথে ‘খুব শিগগিরই’ দেখা করতে পারেন তিনি।
এছাড়া রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট সত্যিই ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে চান বলে জানিয়েছেন মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড ও ডয়চে ভেলে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ট্রাম্প এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করলেন যখন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া আগামী দিনে সৌদি আরবে প্রাথমিক আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রোববার ট্রাম্প বলেন, সৌদি আরবে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে তার প্রত্যাশিত বৈঠক ‘খুব শিগগিরই হতে পারে’। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এটা খুব শিগগিরই হতে পারে। শিগগিরই হবে।”
ট্রাম্প বলেছেন, তার টিম রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ ও কঠিন আলোচনা চালাচ্ছে। তার মতে, “আমার মনে হয়, পুতিন যুদ্ধ থামাতে চান। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও যুদ্ধ বন্ধ করতে চান।”
রাশিয়ার একটি সংবাদপত্র সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, মঙ্গলবার সৌদি আরবের রিয়াদে আলোচনা শুরু হবে। সেখানে রাশিয়ার প্রতিনিধিরাও থাকবেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সোমবার সৌদি আরবে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে এএফপি জানিয়েছে, সৌদি আরবের রাজধানীতে রাশিয়ান কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনায় উচ্চপর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন মার্কো রুবিও।
রোববার সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প আরও বলেন, তার দল রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘দীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য’ আলোচনা করছেন। মধ্যপ্রাচ্যে তার রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফও এই দলে রয়েছেন। রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেন, উইটকফ সম্প্রতি পুতিনের সাথে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছেন।
পুতিন পুরো ইউক্রেন দখল করতে চান বলে বিশ্বাস করেন কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “এটাই ছিল তার কাছে আমার প্রশ্ন। যদি তিনি চালিয়ে যেতে চান তাহলে আমার জন্য একটা বড় সমস্যা হতো। আমি মনে করি তিনি এটি শেষ করতে চান এবং তারা দ্রুত এটি শেষ করতে চান। জেলেনস্কিও এটি শেষ করতে চান।”
সম্প্রতি ট্রাম্প ও পুতিন একটি দীর্ঘ ফোনালাপে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করতে সম্মত হন। তবে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের অংশগ্রহণ ছাড়া তার দেশ সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে না।
এছাড়া যুক্তরাজ্য ইউক্রেনে সৈন্য পাঠাতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ব্রিটেন ও ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর থেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া— চারটি প্রদেশের আংশিক দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী।
এই চার প্রদেশের রাশিয়ার দখলে যাওয়া অংশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ। অবশ্য যুদ্ধরত এই দুই দেশের কেউই তাদের নিজস্ব ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য প্রকাশ না করলেও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হতাহতের সংখ্যা কয়েক লাখ বলে অনুমান করছে।