বন্দর হচ্ছে এমন একটি স্থান যা উপকূল বা সৈকতের খুব কাছাকাছি অবস্থিত। জাহাজ এবং অন্যান্য নৌযানের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পণ্য বা যাত্রী পরিবহনে বন্দর ব্যবহার হয়ে থাকে। সেখানে নৌযানে পণ্য বোঝাই এবং খালাস করা হয়। বিশ্বের যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং সামরিক কারণে বন্দরের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্ল্ড শিপিং কাউন্সিলের তথ্য অনুসারে বিশ্বের শীর্ষ ১০ বন্দরের শীর্ষে রয়েছে চীনের সাংহাই পোর্ট। এই তালিকায় থাকা অন্যান্য পোর্টগুলো সম্পর্কেও আমরা জানবো।
সাংহাই পোর্ট (চীন)
কার্গো ওঠানামার ভিত্তিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বন্দর হচ্ছে চীনের সাংহাই পোর্ট। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে এই বন্দর ৪৩.৩০ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২০ সালে ৪৩.৫ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২১ সালে ৪৭.০৩ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২২ সালে ৪৭.৩ মিলিয়ন টিইইউ এবং ২০২৩ সালে ৪৯.১৬ মিলিয়ন টিইইউ কন্টেইনার পরিচালনা করেছে। টিইইউ জাহাজ বা টার্মিনালের কন্টেইনার ধারণক্ষমতা পরিমাপের একক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। টিইইউ মানে হলো ২০-ফুট সমতুল্য একক। যেমন, একটি ৪০-ফুট কন্টেইনার ২ টিইইউ এর সমান।
পোর্ট অব সিঙ্গাপুর
বিশ্বের শীর্ষ বন্দরগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর। এটি একটি প্রধান আন্তর্জাতিক শিপিং হাব এবং বিশ্বের ব্যস্ততম বন্দরগুলোর মধ্যে একটি। কন্টেইনার ট্র্যাফিক এবং বিভিন্ন ধরণের পণ্য পরিবহনের দক্ষতার জন্য এটি বেশ পরিচিত। এটি সিঙ্গাপুরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি এবং বিশ্ব বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ।
২০১৯ সালে এই বন্দরটি ৩৭.২০ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২০ সালে ৩৬.৯ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২১ সালে ৩৭.৪৯ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২২ সালে ৩৭.২৯ মিলিয়ন টিইইউ এবং ২০২৩ সালে ৩৯.০১ মিলিয়ন টিইইউ কন্টেইনার পরিচালনা করেছে।
নিংবো-ঝোশান পোর্ট (চীন)
নিংবো-ঝোশান বন্দরটি কার্গো টনেজের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বন্দর। বন্দরটি পূর্ব চীন সাগরের উপকূলে, হ্যাংজু উপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে ঝেজিয়াং প্রদেশে নিংবো এবং ঝোশানে অবস্থিত। ২০১৯ সালে এই বন্দরটি ২৭.২০ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২০ সালে ২৮.৭২ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২১ সালে ৩১.০৭ মিলিয়ন টিইইউ, ২০২২ সালে ৩৩.৩৫ মিলিয়ন টিইইউ এবং ২০২৩ সালে ৩৫.৩০ মিলিয়ন টিইইউ কন্টেইনার পরিচালনা করেছে।
তালিকার চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে চীনের শেনজেন পোর্ট। ২০২৩ সালে এটি ২৫.৭৭ মিলিয়ন টিইইউ কন্টেইনার পরিচালনা করেছে। পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে চীনের গুয়াংঝো হার্বার পোর্ট। ২০২৩ সালে এই বন্দরে ২৩.২৩ মিলিয়ন টিইইউ কন্টেইনার পরিচালনা করা হয়। ‘গুয়াংজু পোর্ট অথোরিটি’ পরিচালিত বন্দরটি ১৯৯৯ সালে প্রথম ১০ কোটি টন কার্গো পরিবহনের রেকর্ড গড়ে। এরপর থেকেই বন্দরটি উল্লেখযোগ্য হারে কার্গো ট্রাফিক বাড়তে থাকে। এটি বর্তমানে চীনের কয়লার বৃহত্তম লোডিং ও ডিসচার্জিং বন্দর।
দক্ষিণ কোরিয়ার বুশান পোর্ট এই তালিকার ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার নাকতং নদীর মুখে অবস্থিত এই বন্দর। এই বন্দরটি নর্থ পোর্ট, সাউথ পোর্ট, গ্যামচিওন পোর্ট এবং দাদাইপো পোর্ট নিয়ে গঠিত।
তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে চীনের কিংদাও বন্দর, অষ্টম অবস্থানে রয়েছে হংকংয়ের এস.এ.আর পোর্ট, নবম স্থানে রয়েছে চীনের তিয়ানজিন এবং ১০ম স্থানে রয়েছে নেদারল্যান্ডসের রোটারডাম পোর্ট।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ