বেশিরভাগ জমি এখনও টেকসই চাষের বাইরে : বিবিএস

বাংলাদেশের কৃষি জমির বিশাল অংশ এখনও টেকসই চাষের বাইরে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। প্রায় ৫৬ শতাংশ জমি টেকসই চাষের আওতায় আনতে আরও চেষ্টা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সোমবার (৩০ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস সম্মেলন কক্ষে ‘উৎপাদনশীল ও টেকসই কৃষি জরিপ ২০২৫’ এর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আকতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুবুল হক পাটোয়ারী এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মাসুদ রানা চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেকসই কৃষি পরিসংখ্যান (এসএএস) প্রকল্পের পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। বক্তব্য দেন বিবিএসের এগ্রিকালচার উইংয়ের পরিচালক আলাউদ্দিন এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্মসচিব ড. দীপঙ্কর রায়।

আরও পড়ুনঃ সরকারি সেবায় ঘুষ-দুর্নীতির শিকার ৩১.৬৭ শতাংশ নাগরিক

বিবিএস জানায়, দেশের ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ কৃষি জমি উৎপাদনশীল ও টেকসইভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। তবে ৪৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ জমির টেকসই ব্যবহার হচ্ছে। দেশের ৭৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ কৃষি জমি গত ৩ বছর অর্থাৎ ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে অন্তত একটি বছর লাভজনকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব জমিতে কৃষকেরা উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রকৃত অর্থে আয় করেছেন।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রায় এক তৃতীয়াংশ কৃষক এখনো কৃষি জমির সুরক্ষার বাইরে আছেন। এদিকে ৬৯ দশমিক ১৬ শতাংশ কৃষি জমি এমন কৃষক পরিবারের হাতে রয়েছে যারা কোনো না কোনোভাবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সুবিধার আওতায় রয়েছেন। অর্থাৎ কৃষি ঋণ গ্রহণ, কৃষি বীমা কভারেজ এবং খামারের বৈচিত্র্যকরণ ইত্যাদি সুবিধা পান।

মাটির অবক্ষয়ের বিস্তৃতির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, দেশের ৭২ দশমিক ৭৫ শতাংশ কৃষি জমি এমন পরিবারের কাছে রয়েছে যাদের জমির অন্তত ৫০ শতাংশ মাটির অবক্ষয়ের শিকার। এটি জমির গুণগত মানের অবনতি এবং দীর্ঘমেয়াদি উৎপাদনের জন্য হুমকি। আরও বলা হয়েছে, দেশের ৮১ দশমিক ৮৬ শতাংশ কৃষি জমি পর্যাপ্ত সেচের পানি পাচ্ছে। এছাড়া ৫৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ কৃষি জমি এমন পরিবারের হাতে রয়েছে যারা সার ব্যবহারের প্রস্তাবিত ৮টি পদ্ধতির মধ্যে দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। এর থেকে দেখা যায়, একটি বড় অংশ এখনো রাসায়নিক সার ব্যবহারে অসচেতন।

৫১ দশমিক ৩৭ শতাংশ কৃষি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে টেকসই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা হয়। এখানে একটি বড় অংশ অসচেতনভাবে কীটনাশক ব্যবহার করে। এটা আশঙ্কাজনক।

জরিপে দেখা যায়, ৬০ দশমিক ১২ শতাংশ কৃষি জমি এমন অঞ্চলে অবস্থিত যেখানে অদক্ষ শ্রমিকেরা জাতীয় কৃষি মজুরির চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পায়। যদিও সংখ্যাটি মাঝারি। তবুও কৃষি মজুরি কিছু এলাকায় ভালো পাচ্ছে। জরিপে আরও দেখা যায়, ৯৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ কৃষি পরিবার গত বছর খাদ্যের ঘাটতি বা সংকটে ছিলেন না। এছাড়া ৮৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ কৃষি জমি এমন কৃষক পরিবারে রয়েছে, যারা জমির স্থায়ী মালিক।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ