দেশে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা টানা চার মাস ধরে কমেছে। এ সময় ৬১ লাখের বেশি মুঠোফোনের গ্রাহক সংখ্যা কমেছে। একই সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৫০ লাখ।
গত রোববার (১ ডিসেম্বর) মুঠোফোন ও ইন্টারনেট গ্রাহক নিয়ে সর্বশেষ হিসাব দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সেখানে অক্টোবর পর্যন্ত হিসাব দেওয়া হয়েছে। ওই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছর জুনে মুঠোফোনের সর্বোচ্চ গ্রাহক ছিল ১৯ কোটি ৬০ লাখের বেশি। এরপর গ্রাহক সংখ্যা কমতে থাকে। অক্টোবরে মুঠোফোনের গ্রাহক ছিল ১৮ কোটি ৯৯ লাখের বেশি।
শুধু মুঠোফোনের গ্রাহক সংখ্যা নয়, এ সময় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। বিটিআরসির সর্বশেষ হিসাব বলছে, জুনে দেশে সর্বোচ্চ ১৪ কোটি ২১ লাখের বেশি ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল। এরপর থেকে টানা চার মাস গ্রাহক কমেছে। অক্টোবরে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ১৩ কোটি ৭১ লাখের বেশি। উল্লেখ্য, ৯০ দিনে কেউ একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করলে তাকে গ্রাহক হিসেবে ধরে বিটিআরসি।
বিটিআরসির তথ্য বলছে, এই চার মাসে ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে মুঠোফোন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও কমেছে। জুনে সর্বোচ্চ ১২ কোটি ৯১ লাখের বেশি মুঠোফোন ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল। অক্টোবরে এই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৪ লাখের কিছু বেশিতে। তবে এ সময় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।
মুঠোফোন অপারেটর ও খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সর্বশেষ বাজেটে মুঠোফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট সেবায়। পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও এতে প্রভাব ফেলেছে।
মুঠোফোন ও ইন্টারনেট গ্রাহক কমার বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির চলমান অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব টেলিকম খাতেও পড়েছে। ফলে কয়েক মাসে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট গ্রাহক উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাজেটে সিম কার্ডে কর বৃদ্ধির কারণে নতুন সংযোগেও বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে। অনেক গ্রাহকই একাধিক সিম ব্যবহার করছেন না বা নতুন সিম কিনছেন না। ফলে ক্রমাগত সংযোগসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। সরকার সিমের ওপর কর মওকুফের বিষয়টি বিবেচনা করলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।