যানজটে স্থবির পুরান ঢাকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ (বি ইউনিট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা একই দিনে হওয়ায় পুরান ঢাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। এ যানজটের সম্মুখীন হয়ে পরীক্ষা শুরুর ২২ মিনিটের মাথায়ও পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আসা ফজলে রাব্বি বলেন, যানজটে আটকে পড়ার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিতে আসতে ১৮ মিনিট লেট হয়েছে। বহুনির্বাচনি পরিক্ষার আর দুই মিনিট বাকি থাকায় আমাকে আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। কারণ বহুনির্বাচনি পরীক্ষায় পাস না করলে লিখিত দিয়ে কোনো লাভ নেই। তাই পরীক্ষা না দিয়েই বের হয়ে যাচ্ছি।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই পুরান ঢাকার গুলিস্তান থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তীব্র যানজটের কবলে পড়ে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে পরীক্ষার হলে এসেছেন হাজারো শিক্ষার্থী। সদরঘাটগামী যানবাহনগুলো তাঁতীবাজার ও রায় সাহেবের বাজার মোড় থেকে ঘুড়িয়ে দেওয়া হলেও গুলিস্তান পল্টন পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, আমরা লালবাগ ট্রাফিক জোনের ডিসি, এসিডিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যহত রেখেছি। তারপরও কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

পুরান ঢাকার ট্রাফিকে দায়িত্ব থাকা ইন্সপেক্টর সাঈদুর রহমান বলেন, আমরা ৭ জন ইন্সপেক্টরসহ ৫২ জন এই এলাকার দায়িত্বে আছি। সকাল সাতটা থেকে উপস্থিত আছি। খেয়াল রাখছি যেন যানজট সৃষ্টি না হয়। কোনো শিক্ষার্থীকে পেলে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষার তিনটি কেন্দ্রে (সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি কবি নজরুল ইসলাম কলেজ ও মহানগর মহিলা কলেজ) কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী আসায় এ যানজটের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

শনিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালসহ তিনটি কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা, দুপুর ১টা থেকে ২টা এবং বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তিন শিফটে বি ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘বি’ ইউনিটের মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪২ হাজার ৯৭৪ জন। বিপরীতে আসন সংখ্যা ৭৮৫টি। আসনপ্রতি লড়বেন ৫৫ জন শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াসউদ্দিন বলেন, অনেকের জিপিএ মার্কস একই হওয়ায় তাদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এজন্য এই ইউনিটে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি।

পরীক্ষায় বহুনির্বাচনি প্রশ্নের জন্য থাকবে ২৪ নম্বর এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য থাকবে ৪৮ নম্বর। পরীক্ষার বিষয় থাকবে বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান। এ ছাড়া এসএসসি পরীক্ষার ভিত্তিতে ১২ ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ১৬ নম্বর যুক্ত হবে।

ভর্তিতে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য আসন ৫০৫টি, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জিন্য ১৩০টি এবং বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ৭৫টি আসন রয়েছে। এ ছাড়া সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগের ৭৫টি আসন সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

বি-ইউনিটের সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগে ভর্তিচ্ছুদের লিখিত ও বহুনির্বাচনি পরীক্ষার ফলাফলের মেধাতালিকার ভিত্তিতে ৫০ নম্বরের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় অন্তত ২০ নম্বর পেতে হবে এ বিভাগের ভর্তিচ্ছুদের। লিখিত, বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মেধাতালিকা তৈরি করা হবে।