সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লার অপকর্মের খপ্পরে এলাকাবাসী

ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন বিলাসপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো: আলাউদ্দিন মোল্লা। সাবেক এই চেয়ারম্যানের অপকর্মের খপ্পর থেকে রেহাই পায়নি এলাকার মানুষ। চেয়ারম্যান থাকাকালীন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তার এই অপকর্মের ভুক্তভোগী এলাকার প্রতিটি পরিবার। এলাকায় সংঘঠিত প্রতিটি অপকর্মের সাথে জড়িয়ে আছে সাবেক এই চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লার নাম।

এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে নদী থেকে উত্তেলিত বালু ব্যবসা থেকে আয়, এলাকার বিভিন্ন নিরীহ মানুষের জায়গা জমি দখল করা থেকে অর্জিত আয়, বিচার ও শালিশের নামে লোকজন ঠকিয়ে অর্জিত আয় এবং প্রবাসীদের সাথে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা করে অর্জিত আয়ের মূলহোতা সাবেক এই চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লা। বর্তমানে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থেকে শুরু করে ফৌজধারী মামলা চলমান। দোহার থানায় ২০১৬ সালের জালাল মাতবর হত্যাকান্ডের চার্জশীটভুক্ত আসামী সাবেক এই চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লা। এছাড়া বিগত জুলাই-আগস্ট/২৪ আন্দোলনের হত্যাকান্ডের ঘটনায় রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার এজহারভুক্ত আসামী আলাউদ্দিন মোল্লা। এলাকায় সব ধরণের অপকর্মই সংঘঠিত হত তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে। বিভিন্ন ধরণের অনৈতিক সুবিধার প্রলোভনে নারী গঠিত কেলেঙ্কারীর সাথেও জড়িত তিনি, এ বিষয়ে কয়েকটি থানায় তদন্ত চলমান।

ব্যাংক জালিয়াতি যেন তার প্রতারণার দৈনন্দিন কাজের একটি অংশ হয়ে দাড়িয়েছে, ব্যাংক প্রতারণার বিষয়ে এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন সময় দুর্নীতি দমন কমিশনে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দাখিল করেন।

গত ১৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে দক্ষিণ জয়পাড়া দোহারের নাগরিক মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন মাঝি তার বিরুদ্ধে ব্যাংক প্রতারণার অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়াম্যান বরাবর এক অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন উল্লেখ করেন, ০৫.০২.২০২৫ইং তারিখে আলাউদ্দিন মোল্লা সোনালী ব্যাংক পিএলসি এর জয়পাড়া শাখা থেকে ৮৭ (সাতাশি) লক্ষ টাকা ক্লিয়ারিং এর মাধ্যমে উঠিয়ে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এর জয়পাড়া শাখায় তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লাকি এন্টারপ্রাইজে জমা করেন। তারপর ঐ একই শাখার একই হিসাবে আগের জমাসহ মোট ৯০ (নব্বই) লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন, যা সম্পূর্ণই তার অবৈধ আয়। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে তিনি তার মোট সম্পদ হিসেবে ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে তিনি আর কোন রিটার্ন সাবমিট করেননি। এলাকার সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে এখন একটাই প্রশ্ন এবং আলোচনার বিষয়, এত স্বল্প সময়ে কিভাবে তিনি কোটি টাকার মত সম্পদের মালিক হলেন?

তাছাড়া সম্প্রতি আলাউদ্দিন মোল্লা ব্যাংক জালিয়াতির নতুন এক কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের জয়পাড়া শাখার এমটিডিআর বুক জাল করে ব্যাংক থেকে বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন, ব্যাংক কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের কারনে। উক্ত প্রতারণায় ব্যর্থ হয়ে আলাউদ্দিন মোল্লা একই জাল এমটিডিআর বুক ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির নামে ছাপিয়ে একটি প্রতারক চক্রের মূলহোতা হিসেবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিভিন্নভাবে মানসিক ও সামাজিকভাবে হয়রানি করছেন, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।

সাবেক এই চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লা’র সকল অপকর্ম থেকে এলাকাবাসী পবিত্রাণ চেয়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করে আসছেন। এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।