সাবেক সচিব শাহ কামালের চাঁদপুরে ৫ তলা বাড়ির সন্ধান

সাবেক সচিব শাহ কামালের নিজ জেলা চাঁদপুরেও একটি পাঁচতলা বাড়িসহ সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। চাঁদপুর শহরের বন বিভাগ সড়কের খলিশাডুলি গ্রামে ১০ ইউনিটের পাঁচতলা ভবনসহ তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৪০ শতাংশ। বাড়িটি পৌরসভার মধ্যে হলেও এর হোল্ডিং নম্বর পাওয়া যায়নি। আজ শনিবার দুপুরে গিয়ে ওই বাড়ির সামনে নামফলকও পাওয়া যায়নি।

এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে তাঁর দুটি বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর প্রায় সময় তিনি গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে এসে থাকতেন। সর্বশেষ চার দিন আগে রাতে গাড়ি নিয়ে বাড়ি ঘুরে যান তিনি। একটি দরিদ্র পরিবার তাঁর বাড়িটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে।

শাহ কামালের বাড়ির উত্তরে আছে মো. নুরুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির বাড়ি। দক্ষিণে মো. আবুল বারী মিঞা ও শাহিনা আক্তারের বাড়ি। ওই বাড়ির পৌরসভার হোল্ডিং নম্বর ৯৯৭/৫। পূর্ব দিকে চাঁদপুর বন বিভাগের কার্যালয়।

স্থানীয় খলিশাডুলি গ্রামের বাসিন্দা মজিদ পাটওয়ারী। তাঁর বাবা ও আত্মীয়দের কাছ থেকে সম্পত্তি কিনেছে শাহ কামাল পরিবার। মজিদ পাটওয়ারী বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর আগে এই সম্পত্তি কিনেছেন শাহ কামাল ও তাঁর ভাই মাজহারুল আলম। তবে সর্বশেষ তিনি এসব সম্পত্তি নিজের ও স্ত্রীর নামে লিখে নিয়েছেন। কিছুদিন আগে পাশের একটি জমিও কিনেছেন তাঁর স্ত্রী নামে। বাড়ি নির্মাণ করার সময় আমি তাঁর বাড়ি মাটি দিয়ে ভরাট করে দিয়েছি। ওই ভরাটের আড়াই লাখ টাকা বিল দিয়েছেন সাবেক মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ। সাবেক সচিবের কাছে আমি এখনো সাড়ে ৫ লাখ টাকা পাব।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, ‘চার দিন আগে রাত ১০টার দিকে বাড়িতে আসেন তিনি। আমি তাঁর কালো রঙের গাড়ি থামিয়ে চা খাওয়াতে বলি। পরে আসবেন বলে ঢাকায় চলে যান। তাঁর এই বাড়িটির নির্মাণকাজ ও সবকিছু সামলাতেন মিজানুর রহমান নামের এক ঠিকাদার।’

খলিশাডুলি গ্রামের জিতু পাটওয়ারীর ছেলে জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী বলেন, ‘তিনি খুবই প্রভাব দেখাতেন এলাকায় এলে। পৌরসভার সাবেক মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সখ্য থাকার কারণে সড়কটিও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকা করেছেন। তাঁর পাঁচতলা ভবনটি ২০১৬ সালে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর কাছে ভাড়া দেন। সমিতি তাঁকে মাসে ৭০ হাজার টাকা ভাড়া পরিশোধ করত। ওই অফিস চলে যাওয়ার পর এখন বাড়িটি খালি পড়ে আছে।’

সচিব শাহ কামালের বাবার নাম মো. মোজাহেরুল হক। গ্রামের বাড়ি জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশ ইউনিয়নের কাপাইকাপ গ্রামে। আট ভাই-বোনের মধ্যে কামাল তৃতীয়। গ্রামের বাড়িতে থাকেন তাঁর বড় ভাই ডা. শাহজাহান। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। বক্তব্যের জন্য তাঁর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সাবেক সচিব মো. শাহ কামালের ব্যক্তিগত তিনটি নম্বরে ফোন দেওয়া হয়। তবে তিনটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।