শেয়ার ব্যবসায়ে কারসাজিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তার মা শিরিন আকতারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে কারসাজির মাধ্যমে শেয়ার ব্যবসায় ৯০ লাখ টাকা মুনাফা করেছে সাকিবের প্রতিষ্ঠান।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিএসইসির প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংস্থাটি সাকিব ও তার মায়ের নামে পরিচালিত বিমা কোম্পানি প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের কারসাজির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিএসইসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে সংঘটিত কারসাজিতে যুক্ত ছিলেন সাকিব আল হাসান। যে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স হিসাব ব্যবহার করে শেয়ারবাজারে কারসাজি করা হয় সেটি প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের। সেটি সাকিব ও তার মায়ের নামে একটি বেসরকারি ব্যাংকের সহযোগী ব্রোকারেজ হাউসে খোলা হয়েছিল। গত বছরের ১৭ আগস্ট থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রায় ৩৫ টাকা বা ৮৫ শতাংশ বেড়েছে। ওই সময়ে সিরিজ লেনদেন বা নিজেদের মধ্যে হাতবদল করে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয়। এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন শেয়ারবাজারের বহুল আলোচিত কারসাজিকারক আবুল খায়ের হিরু, সাকিব আল হাসানসহ তাদের নিকটাত্মীয়, স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
ডিএসইর তদন্ত ও বিএসইসির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র তিন দিনে ৬৫ টাকা ২৪ পয়সা ক্রয়মূল্যে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের ১০ লাখ ৬০ হাজার শেয়ার কেনা হয় সাকিব আল হাসান ও তার মায়ের বিও হিসাবে। এ জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। গত বছরের ১২, ১৪ এ ১৭ সেপ্টেম্বর ভিন্ন ভিন্ন দামে এসব শেয়ার কেনা হয়। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখ ২১ হাজার শেয়ার কেনা হয় ১২ ও ১৪ সেপ্টেম্বর। এই দুই দিনে কেনা সব শেয়ারই পাঁচ দিনের ব্যবধানে বিক্রি করে দেন সাকিব আল হাসান। তাতে প্রতি শেয়ারে প্রায় ৯ টাকা করে মুনাফা হয়। সব মিলিয়ে মুনাফা দাঁড়ায় ৯০ লাখ টাকা।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর শেয়ার নিয়ে কারসাজির সাকিব আল হাসান ও তার মা শিরিন আকতারসহ সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জরিমানা করে বিএসইসি। ইশাল কমিউনিকেশন, আবুল খায়ের হিরু, আবুল খায়ের হিরুর বাবা আবুল কালাম মাতলুব, হিরুর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্ট, লাভা ইলেকট্রোডস ও জাহিদ কামাল এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে একই সঙ্গে জরিমানা করা হয়। ইশাল কমিউনিকেশনকে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ, সাকিব আল হাসানকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫০ লাখ, আবুল খায়ের হিরুকে ২৫ লাখ, আবুল কালাম মাতলুবকে ১০ লাখ, হিরুর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্টকে ১ লাখ ও লাভা ইলেকট্রোডস ও জাহিদ কামাল নামের একজনকে ১ লাখ করে টাকা জরিমানা করা হয়।